নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: কালবৈশাখীর পূর্বাভাস। আগামী তিন দিন উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতলে বিক্ষিপ্তভাবে কালবৈশাখী ও বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রবিবার আবহাওয়া দপ্তরের এমন পূর্বাভাস নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে মিনি সচিবালয় ‘উত্তরকন্যা’। ইতিমধ্যে তারা প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে। এদিকে, অনেক স্কুলে গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হয়েছে। তাই দক্ষিণবঙ্গের তাপপ্রবাহের হাত থেকে স্বস্তি পেতে পাহাড়ে হাজির পর্যটকরা। পাহাড়ে পর্যটকদের ভিড় আরও বাড়বে বলেই ট্যুর অপারেটারদের প্রত্যাশা। আবহাওয়ার জেরে পর্যটকদের যাতে সমস্যা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখছে প্রশাসন।
কয়েকদিন থেকেই শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি চলছে। শনিবার সন্ধ্যায় আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ঝড় হয়েছে। কামাখ্যাগুড়িতে গাছ পড়ে এক শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে। তবে রবিবার বিকেল পর্যন্ত নতুন করে কোনও জায়গায় ঝোড়ো হাওয়ার দাপট দেখা না গেলেও শিলিগুড়িতে দুপুরের পর আকাশে মেঘ জমে। কয়েক পশলা বৃষ্টিও হয়। এতে তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। স্থানীয়রা বলেন, গরমের দাপট নেই। আরামদায়ক আবহাওয়া তৈরি হয়েছে।
তবে, কোচবিহার জেলার আকাশ ছিল মেঘমুক্ত। দিনভর রোদের দাপটে কাহিল গোটা জেলা। এদিন জলপাইগুড়ির আকাশে মেঘ জমলেও বৃষ্টি হয়নি। গরমে নাজেহাল বাসিন্দারা। এই অবস্থায় আগামী তিন দিন বিক্ষিপ্তভাবে কালবৈশাখী, বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস ঘোষণা করেছেন সিকিম কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা। তিনি বলেন, বিহার থেকে মণিপুর পর্যন্ত বাতাসের উপরিভাগে পূর্ব-পশ্চিমে নিম্নচাপ অক্ষরেক্ষা বিস্তৃত রয়েছে। সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ জলীয়বাষ্পের জোগান হয়েছে। এজন্যই আগামী তিনদিন উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু জায়গায় ৫০ থেকে ৬০ কিমি গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া চলবে। পাহাড়েও বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তরের এমন পূর্বাভাস ঘিরে সতর্কতা জারি করেছে উত্তরকণ্যা। প্রশাসন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে উত্তরকন্যায় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তরে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে বিভিন্ন সরঞ্জামে সজ্জিত রেসকিউ ভ্যান নিয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তরের এক ডেপুটি সেক্রেটারি বলেন, ইতিমধ্যে বন্যা সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করা নিয়ে প্রতিটি জেলায় প্রস্তুতি মিটিং হয়েছে। প্রতিটি জেলায় দপ্তরের অফিসার ও ভলান্টিয়ারদের নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে। কালবৈশাখী ও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস মেলার সঙ্গে সঙ্গেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সকলকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, পাহাড় এখন পর্যটকে ঠাসা। দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের অধিকাংশ হোটেল, হোমস্টে, লজে প্রায় ঠাঁই নেই অবস্থা। পর্যটকরা বলেন, এখন পাহাড়ের আবহাওয়া মনোরম। প্রশাসন জানিয়েছে, বৃষ্টিতে পাহাড়ের কিছু জায়গায় ধস নামার ও গাছ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলির উপর নজর রাখা হয়েছে। - নিজস্ব চিত্র।