স্বামী বিবেকানন্দের জলপাইগুড়ি আসার ১২৫ বছর পূর্তি, স্টেশনে বসছে স্মারক
বর্তমান | ১২ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: চারবার জলপাইগুড়িতে পা রেখেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। দার্জিলিংয়ে যাওয়ার পথে শেষবার তিনি জলপাইগুড়ি এসেছিলেন ১৯০১ সালের আগস্টে। সেই হিসেবে স্বামী বিবেকানন্দের জলপাইগুড়িতে আসার ১২৫ বছর পূর্তি এবার। এই উপলক্ষ্যে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে বসতে চলেছে বিশেষ স্মারক। আজ, সোমবার ওই স্মারক উন্মোচন করবেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী গৌতমানন্দ মহারাজ। রবিবারই তিনি চলে এসেছেন জলপাইগুড়িতে। তাঁকে ঘিরে শহরে উৎসবের আমেজ।
এদিন সকালে শহরের গান্ধী মোড় থেকে শোভাযাত্রার মাধ্যমে তাঁকে জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে নিয়ে আসা হয়। মহিলারা শঙ্খ ও কলস নিয়ে শামিল হন শোভাযাত্রায়। ছিল আদিবাসী নৃত্য, বৈরাতি নৃত্য। শোভাযাত্রায় বিশাল রথ নজর কাড়ে। স্বামী গৌতমানন্দ মহারাজের আশীর্বচন শোনার পাশাপাশি প্রণাম ও মধ্যাহ্ন প্রসাদ পেতে উপচে পড়ে ভক্তদের ভিড়।
জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের স্বামী শিবপ্রেমানন্দ মহারাজ বলেন, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ ৯৭ বছর বয়সি স্বামী গৌতমানন্দ মহারাজ জলপাইগুড়িতে এসেছেন। এটা আমাদের কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি। এদিন আশ্রমে ভক্তরা তাঁর আশীর্বচন শুনেছেন। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি নেপাল ও অসম থেকেও ভক্তরা এসেছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দের জলপাইগুড়িতে আসার ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে টাউন স্টেশনে বিশেষ স্মারক বসছে। সোমবার ওই স্মারক উন্মোচন করবেন স্বামী গৌতমানন্দ মহারাজ। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলেও একটি অনুষ্ঠান রয়েছে। সেখানেও যাবেন তিনি। এছাড়া জলপাইগুড়ি মিশন আশ্রমে পড়ুয়াদের জন্য একটি হস্টেলেরও তিনি উদ্বোধন করবেন।
জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ আশ্রমের তরফে জানানো হয়েছে, বেলুড় মঠের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন স্বামী যতিশ্বরানন্দ মহারাজ। অবিভক্ত বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ছোটবেলায় পড়াশোনা করেন জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে। এই উপলক্ষ্যে ওই স্কুলেও একটি স্মারক বসছে।
২০২৫ সাল জলপাইগুড়িবাসীর কাছে গর্বের ও আনন্দের। কারণ আজ থেকে ১২৫ বছর আগে ১৯০১ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে দার্জিলিংয়ে যাওয়ার পথে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে নেমেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। তখন চা পানের বিরতিতে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে ৪০ মিনিট দাঁড়াত দার্জিলিং মেল। সেই সূত্রে জলপাইগুড়িতে নেমেছিলেন স্বামীজি। আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষকদের অনেকের দাবি, চা বাগানের শ্রমিকদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও দারিদ্র দূরীকরণ নিয়ে সেসময় তিনি মূল্যবান পথনির্দেশও করেছিলেন। ১৯০১ সালের আগেও অবশ্য তিনবার জলপাইগুড়িতে পা রাখেন স্বামী বিবেকানন্দ। জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ আশ্রমের মহারাজ স্বামী শিবপ্রেমানন্দ বলেন, ১৮৯৭ সালে দু’বার এবং ১৮৯৮ সালে একবার স্বামীজির পদধূলিতে ধন্য হয়েছে জলপাইগুড়ির মাটি। সেই স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতেই জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে স্মারক বসানো হচ্ছে। ওই স্মারক উন্মোচন অনুষ্ঠানে জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি রেলের কর্তারাও উপস্থিত থাকবেন। একইসঙ্গে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণারও দাবি তোলা হয়েছে।