সংবাদদাতা, কাটোয়া: পূর্বস্থলীর জামালপুরের বুড়োরাজের মেলায় অস্ত্রের ঝনঝনানি রোখাই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ পুলিসের কাছে। আজ সোমবার বুড়োরাজের পুজো। প্রশাসন এই পুজো ও মেলায় অস্ত্র নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ করেছে। সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হয়েছে মেলা চত্বর। এর আগে একটি রুটম্যাপও প্রকাশ করেছে প্রশাস। প্রায় হাজারের বেশি পুলিসের নজর রয়েছে বুড়োরাজের পুজোয়।পূর্বস্থলী-২ ব্লকের জামালপুরে বৈশাখ মাসের পূর্ণিমায় বুড়োরাজের পুজো উপলক্ষ্যে লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয়। ইতিমধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলা ছাড়াও নদীয়া, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ থেকে ভক্তরা নানারকম বাজনা নিয়ে আসতে শুরু করেছেন। এই মেলায় সঙ্গে অস্ত্র নিয়ে আসাটাও দস্তুর। ভক্তদের একাংশ রাম দা, ভোজালি, টাঙি থেকে শুরু করে বোম পর্যন্ত নিয়ে আসেন। বছরের পর বছর এমনই প্রথা চলে আসছে। তবে এবারও মেলায় অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকছে। এবার লক্ষাধিক মানুষের ভিড়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। কালনার এসডিপিও রাকেশ চৌধুরী বলেন, বলিদান প্রথা যেহেতু এখানে চালু রয়েছে, তাই বলি পিছু একটা করে মাত্র বগি নিয়ে আসতে পারবেন। আমরা সিসি ক্যামেরায় নজরদারি চালাব। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বুড়োরাজের মেলায় বিভিন্ন জেলা থেকে কাতারে কাতারে মানুষ বাজনা, অস্ত্র নিয়ে পুজো দিতে আসেন। অস্ত্র নিয়ে মেলায় ঢোকা রুখতে পাঁচটি জায়গায় চেক পোস্ট করেছে পুলিস। ছাতনীর মোড়, সানঘোষ পাড়া, নিমদহ ঘোষপাড়া, জামালপুর মোড় ও পলাশবেড়িয়া এলাকায় চেকপোস্টগুলি হয়েছে। প্রতিটি চেকপোস্টে অফিসার মোতায়েন রয়েছেন। পাশাপাশি মন্দির চত্বর পঞ্চাশটির বেশি সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। কন্ট্রোল রুমে ডিএসপি পদমর্যদার অফিসার সব সময় নজরদারি চালাচ্ছেন। পাশাপাশি পূর্বস্থলী রেল স্টেশন, ফেরিঘাটগুলিতেও পুলিস রয়েছে। ভাগীরথী থেকে জল নিয়ে পুজো দিতে আসেন ভক্তরা। তাই অঘটন রুখতে ভাগীরথীর ঘাটগুলিতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী স্পিড বোট নিয়ে নজরদারি চালাচ্ছে। পূর্বস্থলীর বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা সদা সতর্ক রয়েছি। কোনও বেনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। পুজো কমিটির পক্ষে সেবাইত বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মেলায় সবাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবেন, এটাই চাই। এসটিকেকে রোড ধরে প্রচুর মানুষ গাড়ি নিয়েও আসেন। তাই এসটিকেকে রোডে প্রতি বছর ব্যপক যানজট হয়। যানজট মোকাবিলায় এসটিকেকে রোডে প্রচুর দক্ষ ট্রাফিক পুলিস মোতায়েন থাকছে। পাশাপাশি মেলায় পার্কিং জোন থাকছে। এতদিন বুড়োরাজের পুজোর পর বলি দিয়ে মেলা চত্বরেই রান্না করে প্রসাদ খাওয়ার রেওয়াজ ছিল। অতীতে এ নিয়ে সংঘর্ষও হতো। সে সব এড়াতে গতবছর থেকে মেলা চত্বরে রান্না করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভক্তদের জন্য পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।