নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: বর্ধমানের মিষ্টিহাবে তৈরি হবে অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি। বিশ্বমানের মিষ্টি তৈরি থেকে প্যাকেজিং—সবটাই হবে এই ল্যাবরেটরিতে। বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্যে এই পরিকল্পনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করতে রবিবার খড়্গপুর আইআইটি’র বিশেষজ্ঞরা বন্ধ থাকা মিষ্টিহাব পরিদর্শন করেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) প্রসেনজিৎ দাস, বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিক সহ অন্যান্যরা। মূলত, খড়্গপুর আইআইটির খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বিভাগের বিশেষজ্ঞরা বর্ধমানে এসেছিলেন। মিষ্টিহাব ঘুরে দেখার পর তাঁরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গ বৈঠক করেন। জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, বিষয়টি প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেগুলি বাস্তবায়িত করা হবে।মিষ্টিহাব প্রায় দু’বছর ধরে বন্ধ। সেটি এর আগও চালু করতে একাধিকবার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। কিছুদিন চালু হওয়ার পর আবার সেটি বন্ধ হয়ে যায়। সেই কারণে এবার পরিকল্পনা করে আধিকারিকরা ময়দানে নেমেছেন। ল্যাংচা, সীতাভোগ, মিহিদানা, পান্তুয়া সহ বিভিন্ন ধরণের সুস্বাদু মিষ্টি জেলায় তৈরি হয়। বাইরের রাজ্যের বাসিন্দাদের কাছেও এই মিষ্টির চাহিদা রয়েছে। বর্ধমানে এলে অনেকেই মিষ্টি কিনে নিয়ে যান। কিন্তু প্যাকেজিং প্রক্রিয়া আধুনিকমানের না হওয়ায়, তা নষ্ট হয়ে যায় দ্রুত। সেই কারণেই প্যাকেজিংয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মিষ্টির গুণমান নির্ণয় করার মতো আধুনিকমানের ল্যাবরেটরি জেলায় নেই। সেটি এখন তৈরি হবে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সুস্বাদু মিষ্টি তৈরির পাঠ দেওয়া হবে। বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক বলেন, এবার জেলাপ্রশাসন অনেক পরিকল্পনা করে এগোচ্ছে। আগের সমস্যাগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখে শোধরানোর চেষ্টা চলছে। প্রশাসনের এক আধিকরিক বলেন, আগে শুধু মিষ্টির দোকান চালু করা হয়েছিল। কিছুটা দূরে শক্তিগড়ের ল্যাংচাহাব রয়েছে। সেটাই ক্রেতাদের ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছিল। বাস বা অন্য যানবাহন শক্তিগড়েই দাঁড়ায়। এবার শুধু মিষ্টির দোকানের উপর ভরসা করে হাব চালু হচ্ছে না। দোকানে বিক্রির পাশাপাশি তা বাইরে পাঠানোর ক্ষেত্রেও জোর দেওয়া হবে। কিছুদিন পর আবার খড়্গপুর আইআইটির বিশেষজ্ঞরা বর্ধমানে আসবেন। তাঁরা শহরের প্রসিদ্ধ মিষ্টি দোকানের মালিকদের সঙ্গেও কথা বলবেন। নামী মিষ্টি দোকানের মালিকদের অনেকেরই মিষ্টিহাবে স্টল রয়েছে। জেলাশাসক কয়েক মাস আগে একদফা বৈঠক করেছেন। তাঁদের পরামর্শও নেওয়া হয়েছে। দেরি হলেও এই মিষ্টিহাব নতুন রুপে চালু হবে বলে আধিকারিকরা আশাবাদী।প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছেতেই বর্ধমানে মিষ্টিহাব তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সেটির অবস্থানগত কারণের জন্যই সফল ভাবে চলেনি। এবার জেলাপ্রশাসনের কর্তারা অন্যভাবে এই হাব চালু করার টার্গেট নিয়েছে।