রামপুরহাট স্টেশনে আচমকা অটোমেটিক সিগন্যাল বিকল, দেড় ঘণ্টা বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে দূরপাল্লার ট্রেন ও মালগাড়ি
বর্তমান | ১২ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: আচমকা রেলের প্যানেল বোর্ডে নো লাইট! আর তাতেই রবিবার বেশ কিছুক্ষণ থমকে গেল ট্রেন চলাচল। বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে দুরপাল্লার যাত্রীবাহী ট্রেন থেকে মালগাড়ি। তীব্র গরমে নাভিশ্বাস ওঠে সাধারণ কামরার যাত্রীদের। এ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা।
রেলের একাধিক কার্যক্রম যেমন, ট্রেনের গতি ও পথ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যরহৃত হয় প্যানেল। স্টেশনের সিগন্যালিং সিস্টেম, ইন্টারলকিং ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণও করা হয় এর মাধ্যমে। ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে প্যানেলের গুরুত্ব অপরিসীম। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল সাড়ে দশটার সময় হঠাৎই প্যানেল বোর্ড নো লাইট হয়ে পড়ে। ফলে রামপুরহাট স্টেশনে যাত্রীবাহী ট্রেন থেকে মালগাড়ি ঢোকা বন্ধ হয়ে যায়। শুরু হয় যাত্রী ভোগান্তি। মল্লারপুরে দাঁড়িয়ে পড়ে আপ মা তারা এক্সপ্রেস, নলহাটি মুরারই স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে ডাউন কুলিক এক্সপ্রেস ও অমৃত ভারত এক্সপ্রেস। এছাড়া বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে বেশ কয়েকটি লোকাল ও মালগাড়ি। এদিকে, রামপুরহাট জংশনে যাত্রীদের ভিড় জমতে থাকে। শনি ও রবিবার ছুটির দিনে তারাপীঠে দুরদুরান্তের পর্যটকের ভিড় জমে। তাঁদের অনেকেই এদিন বাড়ি ফেরার জন্য রামপুরহাট জংশনে আসেন। কিন্তু ট্রেন না পেয়ে ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। আবার গরমের ছুটিতে ছেলেমেয়েদের নিয়ে অনেকেই পুরী অথবা দার্জিলিংয়ে বেড়াতে যাওয়ার জন্য রামপুরহাট জংশনে এসেছিলেন। তাঁরা ট্রেন না পেয়ে প্লার্টফর্মে বসে পড়েন। একটা সময় যাত্রীভিড়ে পা ফেলার মতো জায়গা ছিল না জংশনে। রেলের অনুসন্ধান কেন্দ্রে লাইন পড়ে যায়।
স্টেশনে পরিবার নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন রামপুরহাটের যাত্রী সন্দিপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘কুলিক ধরে হাওড়া যাব। সেখান থেকে শালিমার এক্সপ্রেস ধরে পুরী যাব। সেইমতো সকাল সাড়ে দশটায় রামপুরহাট জংশনে চলে আসি। কিন্তু শুধু কুলিক নয়, কোনও ট্রেনই রামপুরহাটে ঢুকছে না। অনুসন্ধান কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি প্যানেল বোর্ড বিকল। কখন স্বাভাবিক হবে তা বলতে পারছে না।’ শিয়ালদহ থেকে মা তারা এক্সপ্রেস ধরে রামপুরহাটে ফিরছিলেন সানন্দা সাঁতরা। তিনি বলেন, ‘সকাল ১১ টার কিছু পরে মল্লারপুর স্টেশনে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে পড়ে। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর জানতে পারি, রামপুরহাট জংশনে কোনও সমস্যার কারণে কোনও ট্রেনই ঢুকছে না। অবশেষে সাড়ে বারোটা নাগাদ ধীর গতিতে ট্রেনটি রামপুরহাট জংশনে প্রবেশ করে।’
স্টেশনের ডেপুটি ম্যানেজার নমন কুমার বলেন, ‘প্যানেল বোর্ড নো লাইট হয়ে পড়ায় এই সমস্যা হয়েছে। কোনও ট্রেনকেই রামপুরহাট জংশনে প্রবেশ করানো যাচ্ছিল না। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ট্রেন চালানোর জন্য রেল কর্মীরা লাইনে কাজে নেমে পড়েন।’ অবশেষে সাড়ে ১২টা নাগাদ ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ট্রেন চলাচল শুরু হলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন যাত্রীরা।
পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত বলেন, ‘ভিডিইউ অর্থাৎ ভিজুয়াল ডিসপ্লে ইউনিট ফেল করায় প্যানেল বোর্ড নো লাইট হয়ে পড়েছিল। কোন ট্রেন, কোথায় রয়েছে, সেটা না দেখে তো মুভমেন্ট করানো যায় না। সেই কারণে ট্রেনগুলি আটকে পড়েছিল। পরে ১২টা ২৬ মিনিট থেকে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।’