পালপাড়া কলেজে এমএড কোর্সের অনুমোদন খারিজ করল এনসিটিই
বর্তমান | ১২ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: উপযুক্ত ফ্যাকাল্টি মেম্বার ও ফায়ার সেফটি সার্টিফিকেট না থাকায় যোগদা সৎসঙ্গ পালপাড়া মহাবিদ্যালয়ে এমএড কোর্সে ভর্তি বন্ধ করে দিয়েছে এনসিটিই। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মধ্যে একমাত্র সরকারি ডিগ্রি কলেজ হিসেবে পালপাড়ায় এমএড কোর্সে পঠনপাঠন হতো। ৫০টি আসনে অনেক কম খরচে ওই কোর্স করা যেত। কিন্তু, এনসিটিইর গাইডলাইন অনুসরণ না করায় ওই কোর্স বন্ধ। এমএড কোর্সে পড়ানোর জন্য চারজনকে চুক্তিভিত্তিতে নিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই মুহূর্তে তাঁদের মধ্যে তিনজন বিএডে ক্লাস নেন। যদিও চুক্তিভিত্তিতে নিযুক্ত অধ্যাপিকা এক বছর ধরে বিএডেরও ক্লাস নেন না বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় কলেজের শিক্ষক থেকে ছাত্রছাত্রীদের একাংশ ক্ষুব্ধ।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মধ্যে চারটি সরকারি কলেজে বিএড কোর্সে পঠনপাঠন হয়। কন্টাই পিকে কলেজ, তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয়, পাঁশকুড়া বনমালী কলেজ এবং যোগদা সৎসঙ্গ পালপাড়া মহাবিদ্যালয় এই তালিকায় রয়েছে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ওইসব বিএড কোর্স চলে। একমাত্র পালপাড়া কলেজে ৫০আসনের এমএড কোর্স চালু ছিল। যদিও বাবাসাহেব আম্বেদকর এডুকেশন ইউনিভার্সিটির অধীনে এমএড কোর্স ছিল। ওই কোর্সের জন্য পৃথক ফ্যাকাল্টি লিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক। তাতে বিভাগীয় প্রধান ছাড়াও দু’জন প্রফেসর, দু’জন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এবং ছ’জন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর থাকার দরকার। কিন্তু, পালপাড়া কলেজে ওই সংখ্যক ফ্যাকাল্টি মেম্বার নেই। তাছাড়া, ফায়ার সেফটি সার্টিফিকেটও নেই।
২০২৩ সালের পর থেকেই ওই কলেজে এমএড কোর্সে ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই এই মুহূর্তে এমএড কোর্স বন্ধ। এই মুহূর্তে নতুন গভর্নিং বডি নিয়ে জেরবার কলেজ কর্তৃপক্ষ। উচ্চশিক্ষা দপ্তর থেকে নতুন গভর্নিং বডি গঠনের নির্দেশিকা আসার তিন বছর পরও তা গঠন করা হয়নি। গোটা বিষয়টি নিয়ে ছাত্র সংগঠন আন্দোলন শুরু করতেই হস্তক্ষেপ করে ইউনিভার্সিটি। দ্রুত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন উপাচার্য। কলেজ কর্তৃপক্ষও ৩০মে-র মধ্যে নতুন কমিটি গঠনের কথা লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছে। এই মুহূর্তে এমএড কোর্স নিয়ে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না কলেজ কর্তৃপক্ষ।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কলেজ ইউনিটের সভাপতি সুমন দাস বলেন, এমএড কোর্সের জন্য চুক্তিভিত্তিতে নিযুক্ত চার অধ্যাপক, অধ্যাপিকার মাইনে কলেজের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হয়। কিন্তু, ম্যাডাম ২০২৪সালের মাঝামাঝি থেকে একদিনের জন্য বিএডের ক্লাস নেননি।
কলেজের বিএড কোর্সের বিভাগীয় প্রধান অমিত মাইতি বলেন, আমাদের কলেজে এমএড কোর্স আপাতত বন্ধ। চুক্তিভিত্তিতে নিযুক্ত অধ্যাপিকা বলেন, আমার মতো মোট চারজনকে এমএড কোর্সে পড়ানোর জন্য নেওয়া হয়েছিল। এমএড কোর্সে ভর্তি বন্ধ থাকায় আমাদের বিএড কোর্সে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কারণ, বিএড কোর্সে সাতজন অধ্যাপক ঘাটতি ছিল। আমাদের বিএডের ক্লাস নিতে হয়। ক্লাস না নেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।
পালপাড়া কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য তথা তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয়ের বিএডের বিভাগীয় প্রধান তপন পট্টনায়েক বলেন, ফ্যাকাল্টি মেম্বার এবং ফায়ার সেফটি সার্টিফিকেট নিয়ে সমস্যার কারণে এনসিটিই ওই কলেজের এমএড কোর্স বন্ধ করে দিয়েছে।