• শান্তিপুরে নবলা গ্রামে পুকুর ভরাটকে কেন্দ্র করে বিতর্ক
    বর্তমান | ১২ মে ২০২৫
  • দীপন ঘোষাল, রানাঘাট: পুকুর ভরাটকে কেন্দ্র করে বিতর্ক এবং বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে নদীয়ার শান্তিপুর থানার অন্তর্গত নবলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। স্থানীয় একটি জলা জমি বা পুকুর মাটি ফেলে ভরাট করা হচ্ছিল। তারই প্রতিবাদ করেছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য নিরঞ্জন সরকার। যার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে হুমকি দেওয়ায় হয় বলে অভিযোগ। যদিও অভিযুক্ত পক্ষের দাবি পুকুর ভরাট নয়, পাড় বাঁধানো হচ্ছিল। তবে দু›পক্ষের গন্ডগোলের মাঝে আপাতত সেই কাজ বন্ধ করে দেয় শান্তিপুর থানা।  

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন বুঁইচা এলাকার কিষান মান্ডি সংলগ্ন একটি জলজমি বা পুকুরের পাড়ে সম্প্রতি মাটি ফেলার কাজ চলছিল। যাকে কেন্দ্র করে পুকুর ভরাটের অভিযোগ মাথা তুলে দাঁড়ায়। অভিযোগ ওঠে, নবলা পঞ্চায়েতের প্রমোদনগর এলাকার তৃণমূল সদস্য বিপুল বিশ্বাস বেআইনিভাবে সেই পুকুর ভরাট করছেন। জলাজমি অথবা পুকুরটির মালিক তৃণমূল সদস্যের মামাতো ভাই। যার পরিপ্রেক্ষিতেই নতুন বুঁইচা এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য তথা বিজেপি নেতা নিরঞ্জন সরকার স্থানীয় মানুষজনকে সঙ্গে নিয়ে সেই কাজে বাধা দেন। কোনওভাবেই সেই পুকুর ভরাট করা যাবে না বলে দাবি করেন। অভিযোগ, এরপরই বিপুল সরাসরি ফোন করে নিরঞ্জনকে। প্রথমে তাকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করে, পুকুর ভরাট হচ্ছে না। বরং পাড় বাঁধানো হচ্ছে। তাই এই বিষয়টিতে যেন নিরঞ্জন বাধা না দেয়। যদিও গ্রামবাসীদের আপত্তি থাকায় তিনি নিজে আপত্তি জানিয়েছেন বলে সাফ জানিয়ে দেন নিরঞ্জন। অভিযোগ, তখনই বিপুল হুমকির সুরে বলে, ওখানে মাটি ফেলা এবং কাজ হবেই। যে নেতাকে খুশি নিয়ে আয়। দেখবো কে কীভাবে কাজ আটকাতে পারে। এই হুমকিকে সামনে রেখেই প্রতিবাদে  সোচ্চার হন ওই বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য। যদিও পুকুর ভরাট করার অভিযোগ সরাসরি খারিজ করে দেন তৃণমূলের সদস্য বিপুল বিশ্বাস। তাঁর দাবি, জলাশয় ভরাট করার প্রশ্নই আসে না। বরং কিছুটা মাটি কেটে পাড় বাঁধানোর কাজ হচ্ছিল। তাও বেআইনিভাবে নয়। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের কাছে প্রয়োজনীয় রয়্যালটি দিয়েই সেই কাজ করা হচ্ছিল। তাতে বাধা দেওয়াই অনৈতিক। সেই বিষয়টিই তিনি বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য নিরঞ্জনকে বুঝিয়ে বলেছেন ফোনে। এদিকে, সামগ্রিক বিষয়টি নিয়ে নবলা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান সুদীপ প্রামানিক বলেন, যাদের মধ্যে গন্ডগোল দুইজন পঞ্চায়েত সদস্য ছোটবেলা থেকেই পরস্পরের বন্ধু। সামান্য ব্যাপারে কথা কাটাকাটি হয়ে থাকতে পারে। আর তাছাড়া এই বিষয়টি ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আওতায়। পঞ্চায়েতের বিষয় নয়। এদিকে, পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দু›পক্ষের গন্ডগোলকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। তাই আপাতত পরিস্থিতির মোকাবিলায় ওই পুকুরের পাড়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আপাতত গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও এই খবর সংগ্রহে গেলে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য বিপুল বিশ্বাসের সঙ্গে থাকা তিনজন এক মহিলা সাংবাদিককে হেনস্তা করে বলে অভিযোগ। এ বিষয়টি নিয়ে পৃথক অভিযোগ দায়ের হয়েছে শান্তিপুর থানায়।
  • Link to this news (বর্তমান)