নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: দুর্ঘটনায় মৃত যুবকের দেহ রেখে জাতীয় সড়ক অবরোধকে কেন্দ্র করে শনিবার মেজিয়ার গোস্বামী গ্রাম কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। মৃত যুবকের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করেন অবরোধকারীরা। মেজিয়া থানার পুলিস অবরোধ তুলতে গেলে ইটপাটকেল ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। তাতে কয়েকজন পুলিস কর্মী জখম হন। বাধ্য হয়ে পুলিস লাঠিচার্জ করে। পরে পুলিস ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। রবিবার ধৃতদের বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হয়। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে তিনজনকে দু’ দিনের জন্য পুলিস হেফাজতে পায়। বাকি পাঁচজনের ১৪ দিনের জেলা হেফাজতের মঞ্জুর করেন বিচারক। বাঁকুড়ার পুলিস সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, সপ্তাহ দুয়েক আগে গোস্বামীগ্রামের বাসিন্দা সুদীপ ঘোষ (২৬) ট্রাকের ধাক্কায় জখম হন। শনিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ক্ষতিপূরণের দাবিতে স্থানীয়দের অবরোধকে কেন্দ্র করে ওইদিন পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। পুলিসকে লক্ষ্য করে অবরোধকারীরা ইটপাটকেল ছোঁড়ে। তাতে কয়েকজন পুলিস কর্মী জখম হন। তারফলে মামলা রুজু করে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘাতক ট্রাকটিকে আগেই আটক করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর পুলিস একটি মামলাও রুজু করা হয়। তারপরেও অবরোধ, আন্দোলনের নামে স্থানীয়দের একাংশ আইন হাতে তুলে নিয়েছিল। তারফলে পুলিসকে বলপ্রয়োগ করতে হয়েছে। গত ২৭ এপ্রিল সুদীপ বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। গ্রামের কাছাকাছি বাঁকুড়া-রানিগঞ্জ জাতীয় সড়কে প্রথমে অন্য একটি বাইকের সঙ্গে তাঁর সংঘর্ষ হয়। ফলে দু’জন বাইক আরোহীই ছিটকে পড়েন। ওইসময় ট্রাকটি সুদীপকে ধাক্কা মারে। তাতে তিনি গুরুতর জখম হন। বিভিন্ন জায়গায় তাঁর চিকিৎসা চলে। শনিবার পশ্চিম বর্ধমানের একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অবরোধকারী বলেন, পুলিস বিনা প্ররোচনায় আমাদের উপর লাঠিচার্জ করে। পরে সাতজনকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হলেও আমরা ইটপাটকেল ছুঁড়িনি। অবিলম্বে মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও ধৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। মেজিয়া থানার এক আধিকারিক বলেন, অবরোধের জেরে গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ঘটনায় মৃত যুবকের দেহ রেখে জাতীয় সড়ক অবরোধ বাসিন্দাদের। -নিজস্ব চিত্র