• বাঁকুড়ার ব্যবসায়ীর প্যান কার্ড ব্যবহার করে হাওড়ায় ২২ লক্ষ টাকা লোন
    বর্তমান | ১২ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: অন্যের প্যানকার্ড ব্যবহার করে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার বড়সড় জালিয়াতি চক্র সক্রিয় রয়েছে রাজ্যে। বাঁকুড়ার দুই বাসিন্দার প্যান কার্ড ব্যবহার করে ইতিমধ্যেই জালিয়াতরা কয়েক লক্ষ টাকার ব্যাঙ্ক ঋণ আত্মসাৎ করেছে। ঘটনায় ব্যাঙ্কের লোকজনও জড়িত রয়েছে বলে পুলিসের সন্দেহ। বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ীর প্যান কার্ড ব্যবহার করে ২২ লক্ষ টাকার ঋণ তোলা হয়েছে। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের হাওড়া শাখা থেকে ওই ঋণ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ওই ব্যাঙ্কের ‘কাস্টমার কেয়ার’ থেকে ব্যবসায়ীকে ঋণের কিস্তি মেটানোর জন্য ফোন করা হয়। তখনই তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। এব্যাপারে তিনি সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হবেন বলে ওই ব্যবসায়ী জানিয়েছেন।  

    বাঁকুড়া সাইবার ক্রাইম থানার এক আধিকারিক বলেন, সপ্তাহখানেক আগে পাত্রসায়র থানা এলাকার বাসিন্দা এক ব্যক্তির সঙ্গেও ওই ধরনের প্রতারণা হয়েছে। আমাদের কাছেও এই ধরনের অপরাধ নতুন। তবে এর সঙ্গে সাইবার অপরাধের কোনও যোগ নেই। এটা নিছকই অন্যের নথি ব্যবহার করে প্রতারণা বা জালিয়াতির ঘটনা। যে কোনও থানাতেই অভিযোগ জানানো যাবে। 

    শহরের ওই ব্যবসায়ী বলেন, এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যাঙ্কে আমার ঋণ নেই। ফলে ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের কাস্টমার কেয়ার থেকে ফোন করায় আমি চমকে যাই। ওই ব্যাঙ্কের হাওড়া শাখা থেকে ঋণ তোলা হয়েছে বলে আমাকে জানানো হয়। আমি দ্রুত সংশ্লিষ্ট শাখায় যোগাযোগ করি। আমার নামে দু’দফায় ১৫লক্ষ ৩২ হাজার ও সাত লক্ষ সাত হাজার টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে বলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানায়। তারজন্য আমার প্যান কার্ড ও ফোন নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতারকরা কয়েক মাস কিস্তিও মিটিয়েছে। তারপর তারা তা না মেটানোয় আমাকে ফোন করা হয়। আমি বিষয়টি নিয়ে পুলিসের কাছে অভিযোগ জানাব। তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের কোনও শাখাতেই আমার অ্যাকাউন্ট নেই। অন্য কোথাও দাখিল করা প্যান কার্ডের জেরক্স কপি প্রতারকরা জোগাড় করে থাকতে পারে। ব্যবসার সূত্রে ভবিষ্যতে ব্যাঙ্ক ঋণের প্রয়োজন পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে ঋণ খেলাপির মাশুল আমাকে গুনতে হবে।

    পুলিস জানিয়েছে, এর আগে ওই ধরনের ঘটনায় ব্যাঙ্ককর্মীদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। কারণ ঋণ মঞ্জুর বা যে কোনও ধরনের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা গ্রাহকের ব্যাপারে খুঁটিনাটি জানা প্রয়োজন। ব্যাঙ্কের তরফেও ওই ধরনের নির্দেশ কর্মীদের দেওয়া থাকে। কিন্তু তা মানা হয় না। প্রতারকরা ঋণের পুরো টাকা গায়েব না করে প্রথম কয়েক মাস কিস্তি কেন মিটিয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তরে এক পুলিস আধিকারিক বলেন, কোনও এক কর্মীর সঙ্গে যোগসাজস করেই প্রতারকরা ওই কাজ করে থাকে। মূলত বদলি হওয়া বা চাকরি ছাড়ার আগে বেসরকারি ব্যাঙ্কের কেউ কেউ ওই ধরনের কাজ করে থাকে। সংশ্লিষ্ট কর্মী অন্য শাখায় বদলি হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রতারকরা কিস্তির টাকা মিটিয়ে থাকে। পরে তারা বেপাত্তা হয়ে যায়। কিন্তু সাধারণ গ্রাহক কীভাবে জানবে বিষয়টি? ওই আধিকারিক বলেন, মাঝেমধ্যে ঋণ সংক্রান্ত রেটিং পয়েন্ট চেক করলে বিষয়টি জানা যেতে পারে। তাছাড়া কারও পক্ষে এব্যাপারে জানা প্রায় অসম্ভব।
  • Link to this news (বর্তমান)