• নদীবাঁধের স্পর্শকাতর ‘স্পট’ চিহ্নিত করতে নামল প্রশাসন, আরামবাগে চলছে ধসপ্রবণ এলাকার খোঁজ
    বর্তমান | ১২ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: বর্ষার আগে নদীবাঁধের স্পর্শকাতর ‘স্পট’ চিহ্নিত করতে নামল প্রশাসন। আরামবাগ মহকুমার দ্বারকেশ্বর, মুণ্ডেশ্বরী সহ একাধিক নদ-নদী ও খালের বাঁধ ঘুরে চলছে ধসপ্রবণ এলাকার খোঁজ। সেচদপ্তরের সঙ্গে যৌথ পরিদর্শনে নেমেছেন পঞ্চায়েত ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্তারা। ইতিমধ্যেই খানাকুল-১ ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় দ্বারকেশ্বর, মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাঁধের বিভিন্ন স্পট খতিয়ে দেখা হয়েছে। কোন জায়গায় সংস্কার প্রয়োজন, তা নিশ্চিত করবে সেচদপ্তর।

    খানাকুল-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি মিন্টু পাল বলেন, গত বছর নদীর বাঁধ ভেঙে আমাদের ব্লকের প্রায় সব ক’টি পঞ্চায়েত এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। তাই এবার আমরা বর্ষার আগে আগাম কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছি। এজন্য নদীবাঁধ এলাকার স্পর্শকাতর স্পট চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। বাঁধের দুর্বল অংশগুলি খুঁজে সেখানে মেরামতি করা হবে।

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সম্প্রতি ব্লক ও মহকুমা প্রশাসনের তরফে একাধিক বৈঠক করা হয়। সেই বৈঠকেই নদী বাঁধের দুর্বল অংশগুলি চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন, প্রতি বছর বাঁধের বিভিন্ন অংশে ফাটল, ধস দেখা যায়। সময়মতো মেরামতি না হওয়ায় বর্ষায় অতিরিক্ত জলের চাপে সেইসব অংশ ভেঙে গিয়ে এলাকা প্লাবিত করে।

    সেচদপ্তরের দাবি, নিয়মিত বাঁধ এলাকায় নজরদারি চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই গত বছর বিভিন্ন নদীবাঁধের যেসব অংশ ভেঙে গিয়েছিল, সেগুলি মেরামত করে দেওয়া হয়েছে। কোথায় কোথায় নদীর বাঁধের অংশ দুর্বল রয়েছে, তার খোঁজও চলছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের খানাকুল-১ ব্লকের এক আধিকারিক বলেন, স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাঁধের পরিস্থিতি নিয়ে পাওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে পরিদর্শন হয়েছে। সম্প্রতি দ্বারকেশ্বরের বাঁধের চারটি পঞ্চায়েত এলাকা ঘুরে দেখা হয়েছে। একইভাবে মুণ্ডেশ্বরী ও কানা দ্বারকেশ্বর খালের বাঁধও দেখা হয়েছে। প্রায় ২২টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে অল্পবিস্তর নদীবাঁধ দুর্বল রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে উঠে এসেছে। সেচদপ্তর সেইসব অংশ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

    খানাকুল-২ ব্লকের এক আধিকারিক বলেন, শীঘ্রই আমাদের ব্লকের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলির বাঁধের অবস্থা খতিয়ে দেখতে ফিল্ড ভেরিফিকেশন হবে। গত বছর যেখানে নদীবাঁধ ভেঙেছিল, সেখানে মেরামতির কাজ প্রায় শেষ। উল্লেখ্য, ডিভিসির ছাড়া জলে ও অতিবৃষ্টির ফলে আরামবাগ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে খানাকুলের দু’টি ব্লকের সর্বত্র জলের তলায় চলে যায়। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। তাই আগামী বর্ষার আগে ফের প্লাবন নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বাসিন্দারা। যদিও প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে, বন্যা নিয়ন্ত্রণে আগাম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)