• চুঁচুড়ার প্রিয়নগরে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন, ধৃত দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী
    বর্তমান | ১২ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করল স্বামী। চুঁচুড়ার প্রিয়নগরে শনিবার গভীর রাতে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে রাতেই কোদালিয়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রিয়নগরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীর গলা কাটার পাশাপাশি তাঁকে এলোপাথারি কোপায় স্বামী। রাতেই পুলিস উজ্জ্বল শীল নামের বছর পঁয়ষট্টির প্রৌঢ়কে আটক করে। রবিবার তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পেশ করা হয়। পুলিস জানিয়েছে, মৃতার নাম ঝর্ণা ঘোষ (৫৯)। তিনি আয়ার কাজ করতেন। গত দু’বছর ধরে প্রিয়নগরে দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী উজ্জ্বলের সঙ্গে একটি ভাড়া বাড়িতে তিনি থাকতেন। মৃতার প্রথম পক্ষের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, উজ্জ্বলের মানসিক রোগ আছে।

    চুঁচুড়া থানার পুলিস জানিয়েছে, শনিবার রাতে নিজের অসুস্থতার কথা বলে উজ্জ্বল স্ত্রীকে ডেকে আনে। তারপরেই তঁকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। মৃতার প্রথম পক্ষের ছেলে শুভদীপ ঘোষ চুঁচুড়ার বুড়ো শিবতলা এলাকায় থাকেন। তিনি বলেন, রাতে মা কাজে গিয়েছিলেন। তিনি একটি বাড়িতে এক বৃদ্ধের দেখাশোনার কাজ করেন। সেখান থেকে আমাকে ফোন করে বলেন, যে ওঁনার (উজ্জ্বলের) শরীর খারাপ। আমি অটো, টোটো কিছু পাচ্ছি না। তুই আমাকে প্রিয়নগরে রেখে আয়। আমিই মাকে পৌঁছে দিয়ে আসি। কিছুক্ষণ পরে মা আমাকে ফোন করে বলেন, আমাকে কুপিয়ে দিয়েছে। দ্রুত আমি প্রিয়নগরে যাই। রক্তাক্ত অবস্থায় মাকে উদ্ধার করি। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচাতে পারিনি। মৃতার পুত্রবধূ পুষ্পিতা ঘোষ বলেন, উজ্জ্বল শীল মানসিক রোগগ্রস্ত। ওই লোকটা মায়ের উপর অত্যাচার করত। কিন্তু খুন করে দেবে, এমনটা কখনও ভাবিনি। প্রিয়নগরের বাসিন্দা তথা মৃতার প্রতিবেশী গীতা ঘোষ বলেন, উজ্জ্বল কাজকর্ম কিছু করত বলে শুনিনি। ঝর্ণাদেবী খুব ভালো মানুষ ছিলেন। রাতে শুনলাম তাঁকে কুপিয়ে খুন করেছে স্বামী। উজ্জ্বল বাড়ির দরজা ভিতর থেকে আটকে রেখেছিল। তাই ঝর্ণাদেবীকে উদ্ধার করতে সময় লাগে। এদ্রুত উদ্ধার করা হলে হয়তো বেঁচে যেতেন। ওই বাড়িতে বড় কোনও ঝামেলা, ঝঞ্ঝাটের কথা কখনও শুনিনি।

    মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে ঝর্ণাদেবী উজ্জ্বল শীলকে বিয়ে করেছিলেন। কিছুদিন পর তাঁরা প্রিয়নগরের ভাড়া বাড়িতে চলে যান। ঝর্ণাদেবীর আয়েই ওই পরিবার চলত। শনিবার রাতে উজ্জ্বল বাড়িওয়ালাকে গিয়ে জানায় সে অসুস্থ। বাড়িওয়ালাকে দিয়েই ঝর্ণাদেবীকে ফোন করিয়ে দ্রুত চলে আসতে বলে। কিছুক্ষণ বাদে ঝর্ণাদেবী চলে আসেন। রাত প্রায় ১২টা নাগাদ স্থানীয়রা আর্ত চিৎকার শুনতে পান। উদ্ধারের পর ওই মহিলাকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।
  • Link to this news (বর্তমান)