বউবাজারে স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ২৫০ গ্রাম সোনা নিয়ে চম্পট, ধৃত ১
বর্তমান | ১২ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কয়েকদিন আগে বউবাজারে একটি সোনার দোকানে এক ক্রেতা এসে হাজির হয়। স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে সে জানায়, তারও একটি সোনার দোকান রয়েছে গিরিশ পার্ক এলাকায়। আচমকা অনেক গয়নার ‘অর্ডার’ এসে পড়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত সোনা নেই তার কাছে। তাই বিভিন্ন দোকান থেকে সে সোনা কিনছে। ওই ব্যবসায়ীর থেকে সে ২৫০ গ্রাম সোনা কিনতে চায়। শনিবার সে ওই সোনা আনতে আসবে। সেইমতো ওই দিন দুপুরে বউবাজারে ব্যবসায়ীর দোকানে এসে সে ২৫০ গ্রাম সোনা নেয়। যার দাম প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা। এই ক’দিনের আলাপ-পরিচয়ের কারণে বেশ কিছুটা বিশ্বাসও অর্জন করেছিল সে। সেই সূত্রেই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে সে বলে, তার কাছে নগদ নেই। তাই গিরিশ পার্ক এলাকায় তার দোকানে গেলেই সে চেকে পুরো টাকা মিটিয়ে দেবে। সে গাড়ি নিয়ে এসেছে। তাতেই নিয়ে যাবে ব্যবসায়ীকে। সাতপাঁচ না ভেবে সেই গাড়িতে উঠে পড়েন বউবাজারের ব্যবসায়ী। গিরিশ পার্ক এলাকার কাছাকাছি পৌঁছতেই একটি ট্রাফিক সিগন্যালের কাছে লোকটি বলে, সোনা আসল কি না, তা যাচাই করা দরকার। তারপর একপ্রকার জোর করে ব্যবসায়ীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে সোনা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। গিরিশ পার্ক এলাকার যে দোকানের কথা বলা হয়েছিল, হতচকিত ব্যবসায়ী সেখানে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, ওই সোনার দোকানের মালিক অন্য কেউ। তারা কাউকে এভাবে সোনা আনতে পাঠায়ওনি। তখন প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে মুচিপাড়া থানায় অভিযোগ করেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তদন্তে নেমে শনিবার রাতে মুচিপাড়া থানার পুলিস একজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা জানিয়েছে, ধৃতের নাম জয়জিৎ দে। তার গাড়ির চালকের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিস।
তদন্তকারীরা জেনেছেন, শ্যামপুকুরের বাসিন্দা জয়জিৎ রীতিমতো পরিকল্পনা করে এই প্রতারণা করেছে। পুলিস বউবাজারের দোকানের সিসি ক্যমেরার ফুটেজ থেকেই অভিযুক্তকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়। কিন্তু তার নাম ও ঠিকানা জানা যাচ্ছিল না। অভিযুক্ত ঘটনার দিন যে গাড়ি নিয়ে বউবাজারে এসেছিল, সেই সূত্র ধরে এগতেই মেলে সাফল্য। জানা যায়, গাড়িটি ভাড়ায় নেওয়া হয়েছিল। গাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযুক্তের মোবাইল নম্বর পান তদন্তকারী অফিসাররা। সেই নম্বরের সাবস্ক্রাইবার আইডি ঘেঁটে পুলিস জানতে পারে, অভিযুক্ত প্রতারকের নাম জয়জিৎ দে। বাড়ি শ্যামপুকুর এলাকায়। রাতেই পুলিস সেখানে হানা দিতে তাকে গ্রেপ্তার করে। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত এর আগে একই কায়দায় একাধিক দোকান থেকে সোনা হাতিয়ছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অভিযোগও রয়েছে। হাতানো সোনা কোথায় রেখেছে, ধৃতকে জেরা করে তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিস।