চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের সিংহভাগ রেলপথে বৈদ্যুতিকরণ হলেও এখনও ডিজেল ইঞ্জিন দিয়ে বেশ কিছু ট্রেন চালানো হচ্ছে। এর পিছনে কী কারণ রয়েছে, সে বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলতে চাইছেন না রেলকর্তারা। বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তবে সূত্রের খবর, বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনের ঘাটতি থাকায় বাধ্য হয়ে কিছু ট্রেনকে ডিজে়ল ইঞ্জিন দিয়ে চালাতে হচ্ছে। যদিও বিষয়টি মানতে চাইছে না রেল কর্তৃপক্ষ।
আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত ১৬০ কিলোমিটার রেলপথে দু’বছর আগেই বৈদ্যুতিকরণের কাজ শেষ হয়েছে। পাশাপাশি অসমের গুয়াহাটি থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত রেলপথেও কয়েক বছর আগে বৈদ্যুতিকরণ হয়েছে। সম্প্রতি নিউ কোচবিহার থেকে বামনহাট এবং নিউ কোচবিহার থেকে অসমের গোলকগঞ্জ পর্যন্ত এই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। শুধুমাত্র বঙ্গাইগাঁও থেকে গোয়ালপাড়া হয়ে কামাখ্যা পর্যন্ত রেলপথে কিছু কাজ বাকি আছে।
কয়েকশো কোটি টাকা খরচ করে বৈদ্যুতিকরণের কাজ হলেও তার সুফল সে ভাবে মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের এই অংশে এখনও বেশ কিছু ট্রেন ডিজে়ল ইঞ্জিন দিয়ে চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ । তার মধ্যে ডিএমইউ (ডিজে়ল মাল্টি ইউনিট) ট্রেনগুলো চলছে। কারণ বৈদ্যুতিকরণ হলেও এখনও ইএমইউ (ইলেকট্রিক মাল্টি ইউনিট) ইঞ্জিন না আসায় ডিএমইউ দিয়েই ট্রেন চলছে।
এ ছাড়াও শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার জংশন হয়ে ধুবড়ি পর্যন্ত ইন্টারসিটি, নিউ জলপাইগুড়ি- বঙ্গাইগাঁও প্যাসেঞ্জার, বামনহাট ইন্টারসিটি, গুয়াহাটি ধুবুড়ি ইন্টারসিটি–সহ একাধিক লোকাল ট্রেন ডিজে়ল ইঞ্জিন দিয়ে চলছে। পাশাপাশি আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে নিউ জলপাইগুড়ি কিংবা শিলিগুড়ি হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া বেশ কিছু ট্রেনকেও ডিজে়ল ইঞ্জিন টানছে।
বিবেক এক্সপ্রেস, হামসফর এক্সপ্রেস, সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস, ত্রিপুরা সুন্দরী এক্সপ্রেস, কাটরা এক্সপ্রেস–এর মতো ট্রেনগুলোও এখনও ডিজে়ল ইঞ্জিন দিয়ে চলছে। এই ট্রেনগুলো নিউ কোচবিহার কিংবা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ইঞ্জিন পরিবর্তন করা হয়। এতে রেল এবং যাত্রীদের সময় বেশি লাগছে। খরচ বাড়ছে রেলের। যদি এ ক্ষেত্রে রেলের যুক্তি, এই ট্রেনগুলো গোয়ালপাড়া দিয়ে চলাচল করছে। সেখানে সম্পূর্ণরূপে বৈদ্যুতিকরণ না হওয়ার ফলে এই পরিস্থিতি। এ বিষয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক, কপিঞ্জল কিশোর শর্মা বলেন, ‘সে ভাবে ইঞ্জিনের সমস্যা নেই। বিদ্যুতের কিছু সমস্যা আছে। সাবস্টেশন তৈরির কাজ চলায় কয়েকটি ট্রেনকে এখনও ডিজে়ল ইঞ্জিন দিয়ে চালাতে হচ্ছে।’