• যুদ্ধ উন্মাদনা, সন্ত্রাসের বিপরীতে শান্তি চেয়ে মহামিছিল মহানগরে
    এই সময় | ১২ মে ২০২৫
  • এই সময়: দিন কয়েক আগে কবীর সুমনের ফেসবুক পেজে যুদ্ধ–বিরোধী বার্তা দিয়ে একটি কবিতা পোস্ট করা হয়।

    এয়ার রেড হলে যে প্রোটোকল অনুসরণ করতে হয়, তা পোস্ট করে গায়ক অনিন্দ্য বোস তাঁর ফেসবুক পেজে সম্প্রতি লেখেন — ‘(এয়ার রেড) যেন না হয়, হলে কিন্তু এক্ষুনি আমাদের, মানে সাধারণ মানষের এই হাল হবে।’

    গত সপ্তাহান্তে যাদবপুরে রবীন্দ্রজয়ন্তীতে অভিনেতা চন্দন সেন বলেন, ‘এই যুদ্ধ বন্ধ হওয়া উচিত। কারণ এই যুদ্ধে সাধারণ মানুষ মরবে। অস্ত্র ব্যবসায়ী, শিল্পপতিরা লাভবান হবে।’

    গায়ক শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার দিন কয়েক আগে ফেসবুকে লেখেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ কি পরস্পরের হাত মিলিয়ে যুদ্ধের বিরুদ্ধে গর্জে উঠবে না? ...যুদ্ধের বিভীষিকার কোনও সীমান্ত নেই, মৃত্যুর কোনও নাগরিকত্ব নেই। গর্জে উঠুন যুদ্ধের বিরুদ্ধে।’

    এতদিন এ ভাবেই শান্তির পক্ষে বিচ্ছিন্ন ভাবে সওয়াল করেছেন নাগরিক সমাজের কিছু মানুষ। এ বার সংগঠিত ভাবে ‘যুদ্ধ উন্মাদনা’ ও ‘সন্ত্রাসবাদের’ বিরুদ্ধে শান্তি–সম্প্রীতির মিছিল হতে চলেছে কলকাতার রাজপথে। সিপিএমের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টের সমস্ত শরিক দলের সঙ্গে সিপিআইএমএল (লিবারেশন) এবং এসইউসিআই (সি) কাল, মঙ্গলবার ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত মহামিছিল করবে। দীর্ঘদিন বাদে সিপিএম, লিবারেশনের নেতাদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে শান্তি–সম্প্রীতি মিছিলে শামিল হতে চলেছে এসইউসিআই (সি)। বাম মনোভাবাপন্ন বিশিষ্টজনদেরও দেখা যেতে পারে মিছিলে।

    তার আগে আজ, সোমবার, ‘যুদ্ধ উন্মাদনা’ বিরোধী মিছিল করতে চলেছেন নাগরিক সমাজের বিশিষ্টদের অনেকে। মৌলালি থেকে ধর্মতলা যাবে এই মিছিল। মানবাধিকার কর্মী, সমাজকর্মী, লেখক, গায়করা এর আহ্বান জানিয়েছেন। পহেলগামে হামলার নেপথ্যে থাকা জঙ্গিদের শাস্তিও চাওয়া হবে মিছিলে।

    বামদল, নাগরিক সমাজের একাংশের এমন মিছিলের আহ্বান প্রসঙ্গে বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘এ সব হলো বামেদের পাকিস্তান–প্রেমের নির্দশন। ওরা পাকিস্তান গঠনের পক্ষে ছিল। যে বিশিষ্টরা এখন রাস্তায় নামতে চাইছেন, তাঁরা মুর্শিদাবাদে অশান্তির সময়ে নীরব ছিলেন। রাজ্যের মানুষ এঁদের কোনও গুরুত্ব দেয় না।’

    সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী পাল্টা বলেন, ‘সেলুলার জেলে বিপ্লবী গণেশ ঘোষেরা যখন অত্যাচারের শিকার হন, তখন বিজেপি–র আইকন শ্যামাপ্রসাদ ব্রিটিশের দালালি করেছেন। গণেশের মতো অজস্র বামপন্থীর নাম রয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলে। শ্যামাপ্রসাদের দলের কাছে আমাদের দেশপ্রেম শিখতে হবে না।’ জম্মুতে লস্করের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগে ২০২২ সালে এক বিজেপি–নেতা গ্রেপ্তার হন বলেও জানান সুজন। এ নিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য বিশদে কিছু বলতে চাইছে না। দলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদারের সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, ‘এ নিয়ে আমরা কোনও মন্তব্য করছি না।’

    বাম ও নাগরিক সমাজের মিছিলের সমালোচনা করলেও ‘অপারেশন সিঁদুর’কে মাথায় রেখে অভিনন্দন যাত্রার কর্মসূচি নিয়েছে বঙ্গ–বিজেপি। জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর নেতৃত্বে কমিটিও গঠিত হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে জাতীয় পতাকা, পুস্তিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে গেরুয়া ব্রিগেড।

  • Link to this news (এই সময়)