• রাতে ওষুধের চাহিদা মেটাতে পুরসভার উদ্যোগে মাতৃসদনে দোকান
    এই সময় | ১২ মে ২০২৫
  • এই সময়, শিলিগুড়ি: রাতের শিলিগুড়িতে ওষুধের জন্য ছোটাছুটির দিন শেষ। রাতে ওষুধের প্রয়োজন মেটানোর দায়িত্ব নিচ্ছে শিলিগুড়ি পুরসভা। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে শিলিগুড়ির ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে পুরসভার মাতৃসদনেই তৈরি করা হবে ওষুধের দোকান, যা কিনা গোটা রাত খোলা থাকবে। কোনও বেসরকারি সংস্থাকে দিয়েই এই ওষুধের দোকান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র গৌতম দেব।

    শিলিগুড়িতে গত কয়েক দশক ধরে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও রাতে ওষুধের দোকান খোলার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। কখনও কোনও দোকানদার রাতে খোলা রাখতে রাজি হলেও দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে সেই উদ্যোগ বার বার ভেস্তে গিয়েছে। ফলে গভীর রাতে ওষুধের প্রয়োজন হলে ভুক্তভোগীদের শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ছুটে বেড়ানো ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। ব্যবসায়ীদের একটাই যুক্তি, রাতে দোকান খোলা রাখতে হলে নিরাপত্তা চাই। শেষ পর্যন্ত শিলিগুড়ির মেয়র মাতৃসদনে বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে রাতে ওষুধের দোকান খোলানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন।

    তিনি বলেন, 'মাতৃসদনে নিরাপত্তাজনিত সমস্যা তেমন নেই। চারপাশে লোকজনের বসবাস। দ্বিতীয়ত, মাতৃসদনে নিরাপত্তা রক্ষী রয়েছে। ফলে সমস্যা হবে বলে মনে হয় না।’ গোটা উত্তরবঙ্গজুড়ে যত ওষুধের দোকান রয়েছে, তার চেয়েও বেশি দোকান কেবল শিলিগুড়ি শহরেই রয়েছে। খুচরো তো বটেই, পাইকারি ওষুধের দোকানও ভুরিভুরি। উত্তরবঙ্গের ওষুধ কেনাবেচার মূল কেন্দ্রই শিলিগুড়ি। সারা দিনে অন্তত কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা হয়। তার মধ্যে ওষুধ নিয়ে রীতিমতো কালোবাজারি চলে। কোনও একটি ওষুধের বাজারে আকাল পড়লেই দাম বেড়ে যায়।

    বিশেষ করে লাইফ সেভিং ড্রাগের খোঁজে রোগীর পরিবারের লোকেদের হন্যে হতে হয়। এর বাইরে সাধারণ ওষুধ নিয়েও নানা সমস্যা রয়েছে। একদল ব্যবসায়ী যদি ২২ শতাংশ পর্যন্ত ওষুধের দামে ছাড় দেন। তখন অন্যপক্ষ দাবি করেন, শহরে ভেজাল ওষুধের কারবার চলছে। এছাড়া জেনেরিক ওষুধের দোকানও রয়েছে। এত ওষুধের দোকান থাকা সত্বেও কেন রাতে কোনও দোকান খোলা পাওয়া যায় না তার কোনও সদুত্তর নেই।

    বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিডিএ) মধ্যেও খেয়োখেয়ি রয়েছে। তার জেরে শিলিগুড়ি কমিটি কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে রয়েছে। বিসিডিএ’র অন্যতম কর্তা পিন্টু সাহা বলেন, ‘রাতে ওষুধের দোকান খোলার ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা নিরাপত্তা। আগে কয়েক বার রাতে ওষুধের দোকান খোলা হয়। কিন্তু নিরাপত্তার প্রশ্নেই বন্ধ করে দিতে হয়।’

    তবে পুরসভা কেবল রাতে ওষুধের দোকান খোলার ব্যবস্থা করাই নয়, পুরসভা পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও চিকিৎসকের অভাব মেটাতেও উদ্যোগী হয়েছে। খাতায় কলমে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং সুস্বাস্থ্যকেন্দ্র মিলিয়ে ২৫ জন চিকিৎসক রয়েছেন। এর বাইরে মাতৃসদনেও চিকিৎসক রয়েছেন। সম্প্রতি কয়েকজন চিকিৎসক উচ্চতর শিক্ষার প্রয়োজনে চাকরি ছেড়ে দেন। ওই সমস্ত শূন্যপদে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গৌতম বলেন, ‘শূন্যপদে চিকিৎসক নিয়োগ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যতদিন নতুন চিকিৎসক না-আসছেন, ততদিন কর্মরত চিকিৎসকদের দিয়েই ঘাটতি মেটানো হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)