মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্যালাইনকাণ্ডে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন নাসরিন খাতুন। রবিবার রাতে এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। গত ১২ জানুয়ারি থেকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন নাসরিন। নাসরিনের জামাইবাবু ইনসান আলি বলেন, ‘দিন দশেক আগেই জেনারেল বেডে দেওয়া হয়েছিল নাসরিনকে। ১০ মে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। ৯ মে রাত থেকে ফের খিঁচুনি, বমি শুরু হয়। রবিবার রাতে ডাক্তাররা জানালেন, ও আর নেই।’
গত ৮ জানুয়ারি বুধবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দেন নাসরিন খাতুন। এর পর তাঁকে রিঙ্গার্স ল্যাকটেট স্যালাইন দেওয়া হয়। সেই দিনের সমস্ত প্রসূতিতেই এই স্যালাইন দেওয়া হয়েছিল। এর পরই পাঁচ প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১০ জানুয়ারি ভোরে মারা যান মামণি রুইদাস নামে এক প্রসূতি।
তুলনামূলকভাবে কম অসুস্থ রেখা সাউ নামে এক প্রসূতি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বাকি তিন জন মাম্পি সিংহ, মিনারা বিবি ও নাসরিন খাতুনকে ১২ জানুয়ারি এসএসকেএমে ভর্তি করানো হয়। মাম্পি, মিনারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবে কেশপুরের নাসরিনের আর ঘরে ফেরা হলো না। ছুঁয়ে দেখা হলো না কোলের সন্তানকে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী বলেন, অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। রবিবার রাতে ডায়ালিসিস নিতে নিতেই মাল্টিঅর্গান ফেলিওর হয়ে নাসরিন খাতুনের মৃত্যু হয় বলে জানতে পেরেছি। আজ এসএসকেএম হাসপাতালেই দেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে। তার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফেই দেহ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে।’
কেশপুরের ন্যাড়াদেউলের বাসিন্দা ছিলেন নাসরিন। তাঁর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন স্বামী সেলিম খান-সহ পরিবারের সদস্যরা। সেলিমের বক্তব্য, ‘এ বার আমার সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে কী ভাবে মানুষ করব?’