• ভোটের আগে দলের সাংগঠনিক কাজেও শুভেন্দুকে জুড়ল বিজেপি
    এই সময় | ১২ মে ২০২৫
  • এই সময়: বিজেপির সাংগঠনিক বিষয়ে সচরাচর নাক গলান না বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বিজেপির পরিষদীয় দল নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু ২৬–এর বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শুভেন্দুকে সংগঠনের কাজেও ‘ব্যবহার’ করতে চাইছেন। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই তাঁকে বেশ কিছু সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

    রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকগুলিতেও এতদিন হাজির থাকতেন না নন্দীগ্রামের বিধায়ক। এ বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে শুভেন্দু ব্যাখ্যা দিতেন, ‘দলের কোনও সাংগঠনিক দায়িত্বে আমি নেই। তাই আমার ওই বৈঠকে থাকা বাধ্যতামূলক নয়।’

    এমনকী, বঙ্গ–বিজেপির কোনও সাংগঠনিক বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিতেও ঘোর অনীহা দেখাতেন তিনি। কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগে সংগঠক শুভেন্দুকে মাঠে নামানোর কৌশল নিয়েছে গেরুয়া শিবির।

    সম্প্রতি সল্টলেকে রাজ্য বিজেপির একটি সাংগঠনিক বৈঠকে হাজির ছিলে‍ন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং রাজ্যের সাংগঠনিক নেতাদের উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে ভাষণও দেন শুভেন্দু। তাৎপর্যপূর্ণ হলো, সেখানে তিনি বঙ্গ–বিজেপির সাংগঠনিক ত্রুটিগুলি ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বহুক্ষেত্রে যে জল মেশানো সাংগঠনিক রিপোর্ট দিল্লিতে পাঠা‍নো হয়, সেটাও ঠারেঠোরে কেন্দ্রীয় নেতাদের বুঝিয়ে দিয়েছেন।

    খাতায়–কলমে এ রাজ্যে বিজেপির সদস্য সংখ্যা ৬১ লক্ষ। কিন্তু দলীয় কর্মসূচিতে তাঁদের দেখা যায় না কেন, এই প্রশ্ন তুলে বিরোধী দলনেতা আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, পার্টির সদস্য সংগ্রহ অভিযানেও জল মেশানো হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় বিজেপির কর্মসূচিগুলিতে কেন ১০০–১৫০ জনের বেশি কর্মীর ভিড় হয় না, সেই প্রশ্নও সাংগঠনিক বৈঠকে তুলেছেন তিনি।

    ২৬–এর বিধানসভা ভোটে ‘সিরিয়াসলি’ লড়তে চাইলে বুথস্তরে সংগঠন আরও মজবুত করার কথাও শুভেন্দু বলেন সাংগঠনিক বৈঠকে। যা দেখে বিজেপির এক প্রবীণ নেতার মন্তব্য, ‘প্রথম বৈঠকেই ছয় হাঁকিয়েছেন শুভেন্দু। বঙ্গ–বিজেপির সংগঠন যে নড়বড়ে, সেটা তিনি বৈঠকে চেপে রেখেননি। এতদিন দলের সাংগঠনিক বিষয়ে নাক না গলালেও দিল্লি এখন চাইছে তিনি নাক গলান। নির্বাচনের আগে সংগঠনকে মজবুত করুন।’

    বেশ কয়েক মাস আগে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলে‍ন, দলের সাংগঠনিক বৈঠকগুলিতে কেন শুভেন্দু অধিকারীকে দেখা যায় না? জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের ওই বৈঠকগুলি দীর্ঘক্ষণ চলে। উনি হয়তো কমফোর্ট ফিল করেন না।’

    রাজ্য বিজেপির একাংশের ব্যাখ্যা, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মতো শুভেন্দু এ বার নিয়মিত দলের সংগঠনে মাথা ঘামাতে শুরু করলে পার্টির অনেকেই সাংগঠনিক বৈঠকগুলিতে ‘আনকমফোর্ট ফিল’ করবেন।

  • Link to this news (এই সময়)