• ভারত-পাক উত্তেজনার আবহে নবান্নে বৈঠক মুখ্যসচিবের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১২ মে ২০২৫
  • আজ শেষ হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির মেয়াদ। এই আবহে রবিবার রাজ্যের সব শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের উদ্দেশে তিনি একাধিক নির্দেশ জারি করেছেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কড়া করতে এবং বাহিনীর সম্ভাব্য উপস্থিতি সামাল দিতে কী কী প্রস্তুতি নিতে হবে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যসচিব। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপাররা ভার্চুয়ালি এই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন।

    দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা যাতে নিখুঁত থাকে, তা নিয়েও কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। রেডিয়ো, মোবাইল বা অন্য যে কোনও যোগাযোগ মাধ্যম সব ক্ষেত্রেই যেন ত্রুটিমুক্ত থাকে, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি জেলার পুলিশ সুপার ও কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের এই নির্দেশ দ্রুত কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষের আবহে সমাজমাধ্যও ও সংবাদমাধ্যমগুলি ভূয়ো ভিডিও দেখিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। আগামী দিনে যাতে এই সংক্রান্ত কোনও পরিস্থিতি তৈরি না হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। নবান্নের আশঙ্কা, ভূয়ো প্রচার তথা গুজবের কারণে বড়সড় ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই গুজব এবং ভুয়ো প্রচার কড়া হাতে মোকাবিলা করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব।

    কোনওরকম তথ্য এলে তা সঙ্গে সঙ্গে ডিজি কন্ট্রোল রুমে পাঠাতে বলা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের ডিজির কন্ট্রোল রুমে যাতে কেবলমাত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদেরই রাখা হয়, সে বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সীমান্তবর্তী এলাকার কোনও তথ্য যাতে নজরের বাইরে না যায়, সে বিষয়ে কড়া নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গেই বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের শীর্ষ আধিকারিকদের।

    নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের প্রতিটি থানায় আগামী দুই মাসের জন্য রেশন মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই রেশন শুধু স্থানীয় পুলিশ নয়, বহিরাগত বাহিনীর সদস্যদের প্রয়োজনেও ব্যবহার করা যাবে। পাশাপাশি বাহিনী মোতায়েন হলে তাদের থাকার ও খাবারের ব্যবস্থা সম্পর্কে আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি থানায় কমপক্ষে ১৫–২০টি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট মজুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। যে কোনও ধরনের অপারেশন বা অশান্তির পরিস্থিতিতে এই জ্যাকেট পুলিশ ও বাহিনীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।

    প্রতিটি থানা এলাকায় বহিরাগতদের গতিবিধির উপর নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোনও এলাকায় যাতে গোষ্ঠী সংঘর্ষের মতো ঘটনা না ঘটে সে সম্পর্কে সতর্ক থাকতে বলেছে নবান্ন। সর্বপরি রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে আরও জোরদার করতেই এই প্রশাসন ও পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)