দিগন্ত মান্না, কোলাঘাট
বেআইনি ভেড়ি নিয়ে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু বাস্তবে কোনও কিছুই কার্যকর হয়নি বলে অভিযোগ। পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক জায়গায় সরকারি জায়গা দখল করে রমরমিয়ে চলছে ভেড়ির কারবার। চাষের জমির শ্রেণি পরিবর্তন না করেই চলছে মাছ চাষ।
ভেড়ির মালিকেরা ভেড়ি থেকে লাভের টাকা ঘরে তোলার পাশাপাশি জমির জন্য কৃষক বন্ধু, ফসল বিমার মতো সরকারি প্রকল্পের সুযোগও নিচ্ছেন। ফলে নষ্ট হচ্ছে সরকারি টাকা। সব মিলিয়ে বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বেশ কয়েক বছর আগে জেলার নিচু এলাকা হিসেবে পরিচিত ময়নার প্রায় ৬০টি মৌজায় কৃষিজমির উপর গড়ে ওঠে অসংখ্য ভেড়ি। ‘ময়না মডেল’-এর সাফল্য দেখে জেলায় বেশ কিছু ভেড়ির মালিক তমলুক, নন্দকুমার, কোলাঘাট, পাঁশকুড়ার মতো এলাকায় চাষের জমিতে ভেড়ি তৈরি করেন।
ভেড়ি এলাকার জমিগুলি কৃষি দফতরের নথিতে এখনও কৃষিজমি হিসেবে উল্লেখ থাকায় সেই নথিকে হাতিয়ার করে ভেড়ির মালিকেরা কৃষক বন্ধু, ফসল বিমার মতো সরকারি সুবিধাও ভোগ করছেন বলে অভিযোগ।
বেশ কয়েক বছর আগে জেলার নিচু এলাকা হিসেবে পরিচিত ময়নার প্রায় ৬০টি মৌজায় কৃষিজমির উপর গড়ে ওঠে অসংখ্য ভেড়ি। ‘ময়না মডেল’-এর সাফল্য দেখে জেলায় বেশ কিছু ভেড়ির মালিক তমলুক, নন্দকুমার, কোলাঘাট, পাঁশকুড়ার মতো এলাকায় চাষের জমিতে ভেড়ি তৈরি করেন।
ভেড়ি এলাকার জমিগুলি কৃষি দফতরের নথিতে এখনও কৃষিজমি হিসেবে উল্লেখ থাকায় সেই নথিকে হাতিয়ার করে ভেড়ির মালিকেরা কৃষক বন্ধু, ফসল বিমার মতো সরকারি সুবিধাও ভোগ করছেন বলে অভিযোগ। এ রাজ্যে কৃষকদের হয়ে বিমা সংস্থাকে ফসল বিমার প্রিমিয়ামের টাকা দেয় রাজ্য সরকার।
পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক এলাকায় রূপনারায়ণ নদের চর দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য বেআইনি ভেড়ি। ভগবানপুর, পটাশপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং এলাকায় কেলেঘাই নদীর চর দখল করেও ভেড়ি গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।
২০২১ সালে ভগবানপুরের তালছিটকিনিতে কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ বন্যা হয়। বন্যার পর বেআইনি সরকারি জায়গা দখল করে করে ওঠা ভেড়ি উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন। প্রতিটি মহকুমায় একটি করে কমিটি গঠন করে বেআইনি ভেড়ি চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু তার পর আর কোনও কাজ এগোয়নি বলে অভিযোগ।
গত বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে বেআইনি ভেড়ি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সাত দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব করেছেন তিনি। বেআইনি ভেড়ি নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দীর্ঘদিন আন্দোলন করছে তমলুক মহকুমা মাছের ঝিল বিরোধী কৃষক সংগ্রাম কমিটি।
সংগঠনের উপদেষ্টা নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, ‘ভেড়ির মালিকেরা কৃষিকাজ না করেও কৃষি সংক্রান্ত সমস্ত সুবিধা ভোগ করছেন। জমির শ্রেণি পরিবর্তনে সাড়া দেননি ভেড়িতে জমি দেওয়া কৃষকরা। ফলে সরকারি টাকা নষ্ট হচ্ছে।
পাশাপাশি খাল এবং নদী দখল করে গড়ে ওঠা বেআইনি ভেড়ি নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি জেলা প্রশাসন। ভেড়িগুলি খাল এবং নদীর প্রবাহে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবিলম্বে বেআইনি ভেড়ি নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করুক প্রশাসন।’