পাকিস্তানের সঙ্গে আপাতত সংঘর্ষবিরতি হলেও, পরিস্থিতি এখনও পুরো স্বাভাবিক হয়নি মনে করছেন প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। রবিবার, সরকারি ছুটির দিনেও মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার বিভিন্ন দফতর এবং জেলা প্রশাসনগুলির সঙ্গে যে ভাবে প্রস্তুতি বৈঠক করেছেন, তাতে এই চর্চা আরও জোরালো হচ্ছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
এ দিনের বৈঠকে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ছাড়াও ছিলেন খাদ্য, দমকল, স্বাস্থ্য, অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের কর্তা, আধিকারিকেরা। সূত্রের দাবি, বৈঠকে সামগ্রিক প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহল। যেমন, অসামরিক প্রতিরক্ষার সব প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে। তাতে সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ, প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের জোগান স্বাভাবিক রাখতে হবে। আচমকা কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হলে অসামরিক প্রতিরক্ষা কত দ্রুত কাজ শুরু করতে পারছে, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে জেলা প্রশাসনগুলিকে। দমকল বিভাগও একই প্রস্তুতি নেবে তাদের মতো করে। সংশ্লিষ্ট দফতর প্রয়োজনীয় কিছু উপকরণ কিনতে পারে এই পরিস্থিতিতে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এই ধরনের প্রস্তুতিতে জরুরিকালীন ক্ষমতা প্রয়োগে রাজ্যকে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
সূত্র জানাচ্ছে, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা, দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরকে। সরকারের বিশ্লেষণ, যথেষ্ট পরিমাণে খাদ্য সামগ্রী মজুত রয়েছে রাজ্যে। এই অবস্থায় রেশন ব্যবস্থা যথাযথ ভাবে চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। একই সঙ্গে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, গোয়েন্দা তথ্য, গুরুত্বপূর্ণ ভবন বা পরিকাঠামোর সুরক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে পুলিশকেও চোখ-কান খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব বিভাগের সঙ্গে যথাযথ সমন্বয়ের উপরেও জোর দিয়েছে নবান্ন। পাশাপাশি এ দিন বৈঠকে জানানো হয়, পাকিস্তান শনিবার রাতে সংঘর্ষবিরতি ভেঙে গোলা ছুড়েছে। তাই দিল্লি থেকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। সে কারণে এ দিনের বৈঠকে প্রস্তুতির সব দিক দেখে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে।
বস্তুত, গত ৭ মে গোটা দেশের সব রাজ্যে অসামরিক প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির মহড়া শুরু করতে বলেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এ রাজ্যে কিছু বেসরকারি বিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠান সে কাজ করলেও, প্রশাসনিক ভাবে মহড়া পরিচালিত হয়নি এত দিন। পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণার পরে শনিবার রাতেই সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব গোবিন্দ মোহন। সূত্রের দাবি, সেই বৈঠকেও প্রস্তুতিতে কোনও ফাঁক না রাখার বার্তাই দেওয়া হয়েছিল। ঘটনাচক্রে তার পরেই এ দিন সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি।