দ্বিতীয় হুগলি সেতুর সংস্কারের কাজ শুরু জুনে, রাতে একটি লেন বন্ধ রেখেই অধিকাংশ মেরামতির কাজের ভাবনা
আনন্দবাজার | ১২ মে ২০২৫
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে শুরু হতে চলেছে দ্বিতীয় হুগলি সেতু, অর্থাৎ বিদ্যাসাগর সেতুর সংস্কারের কাজ। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জুন মাস থেকেই শুরু হবে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সেতুর একটি লেন বন্ধ রেখে ধাপে ধাপে কাজ চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ৩৩ বছর আগে, ১৯৯২ সালের পুজোর সময়, অর্থাৎ অক্টোবর মাসে চালু হওয়া এই সেতুটি বর্তমানে কলকাতা ও হাওড়ার মধ্যে অন্যতম ব্যস্ত সড়কপথ। প্রতি দিন কয়েক লক্ষ মানুষ এবং হাজার হাজার গাড়ি চলাচল করে এই সেতু দিয়ে। ফলে যান চলাচল একেবারে বন্ধ রাখা প্রায় অসম্ভব। সে কারণেই প্রশাসন চায়, কাজের মূল চাপ যেন রাতের বেলায় নেওয়া যায়। তবুও কয়েকটি দিন ১০-১২ ঘণ্টার জন্য একটি লেনে সম্পূর্ণ যান চলাচল বন্ধ রাখা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। তবে তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেই জানিয়েছে নবান্নের একটি সূত্র।
নবান্নে রাজ্য সচিবালয় স্থানান্তরের পর সেতুটির গুরুত্ব আরও বেড়েছে। প্রশাসনের শীর্ষ মহলের মতে, সেতুর সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘস্থায়িত্ব রক্ষা করা এখন একান্ত জরুরি। প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কারের কাজ শুরু হবে। এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি অভিজ্ঞ জার্মান সংস্থাকে, যারা কলকাতার একটি সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করবে। সংস্কারের প্রাথমিক ধাপে সেতুর দুর্বল হয়ে পড়া ২০টি ‘স্টে কেব্ল’ পরিবর্তনের কাজ হাতে নেওয়া হবে। এই কেব্লগুলি সেতুকে উপরের দিকে টান দিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করে। কেব্ল বদলের পর শুরু হবে সেতুর ‘বিয়ারিং’ বদলের কাজ, যা সেতুর ভারসাম্য রক্ষার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ হতে প্রায় ১৫ মাস সময় লাগতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এই সময়কালে যান চলাচল সচল রাখার সঙ্গে সঙ্গে সেতুর মেরামতও কার্যকর ভাবে সম্পন্ন করার চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত প্রশাসন। এই প্রকল্প সফল হলে আগামী দশকগুলির জন্য সেতুর স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।