নিরুফা খাতুন: দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় তাপপ্রবাহ চলছে। কলকাতার পারদও ৪০ ছুঁইছুঁই। তাপপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি। প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে শহরবাসী। এই পরিস্থিতিতে বাড়তি যত্ন নেওয়া হচ্ছে আলিপুর চিড়িয়াখানার আবাসিকদেরও। দহনজ্বালা কমাতে ভল্লুক, ক্যাঙারুদের ঘরে এখন কুলার চলছে। ফ্যানের হাওয়ায় ঘুমাচ্ছে বাঘ-সিংহ। টকদই, লস্যি খাচ্ছে শিম্পাঞ্জি। পাখি ও সাপের ঘরে স্প্রিংকলার দিয়ে ছেটানো হচ্ছে জল।
গরম পড়তেই বাঘ-সিংহের পাতে মাংসের পরিমাণ কমিয়ে আনা হয়েছে। শীতে প্রায় ১১ কেজি মাংস দেওয়া হয় বাঘ-সিংহকে। সেখানে এখন ৮ কেজি মাংস দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে ওআরএস ও অ্যান্টি স্ট্রেস ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। গরমে পাখি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। রোদের তাপ থেকে বাঁচাতে তাদের খাঁচায় খসখস লাগানো হয়েছে। দুবেলা সেখানে স্প্রিংকলার দিয়ে জল ছেটাচ্ছেন কর্মীরা। ডায়েট পরিবর্তন হয়েছে শিম্পাঞ্জি, ভল্লুকদেরও। শিম্পাঞ্জিরা বেশি করে এখন শসা, তরমুজ খাচ্ছে। সকালে ফলের জুসের সঙ্গে লস্যি ও দকদই দেওয়া হচ্ছে। ভল্লুকরাও এখন টকদই দিয়ে ভাত খাচ্ছে। চিড়িয়াখানায় শ্লথ ভল্লুকের পাশাপাশি হিমালয়ন ভল্লুকও রয়েছে। এই হিমালয়ান ভল্লুকদের ঘরে কুলার বসানো হয়েছে। সেইসঙ্গে ঘর ঠান্ডা রাখতে বরফ দেওয়া হয়েছে। গরম থেকে বাঁচতে রোজই স্নান করছে বাঘ, চিতা, জাগুয়ার, হাতি, শিম্পাঞ্জি।
গরমে চিড়িয়াখানায় দর্শকসংখ্যা খুব কম থাকে। তবু হাতে গোনা কিছু দর্শক আসছে চিড়িয়াখানায়। কিন্তু এই দাবদাহে ঘর ছেড়ে বের হচ্ছে না চিড়িয়াখানার সদস্যরা। খাঁচার সামনে গিয়ে দর্শকরা হাঁকডাক করলেও তারা সাড়া দিচ্ছে না। সকালের দিকে স্নান করে সেই যে ঘরে ঢুকে পড়ছে স্নেহাশিস, রূপারা আর তারা ঘর থেকে বের হচ্ছে না। ঘরে পাখার হাওয়ায় সারাদিন কাটাচ্ছে। আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা অরুণ মুখোপাধ্যায় জানান, গরমে পশুপাখিদের ডায়েট চার্ট পরিবর্তন করা হয়েছে। বাঘ-সিংহদের মাংসের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিম্পাঞ্জিদের বেশি করে শসা, তরমজু দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে ফ্রুট জুস, লস্যি, টকদই থাকছে। পশুপাখির খাঁচায় ওআরএস জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পশুপাখিদেরও হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা থাকে। তাই তাদের রোজ স্নান করানো হচ্ছে। পাখির ঘরে দুবেলা জল ছেটানো হচ্ছে।