অবশেষে শুরু হতে চলেছে দ্বিতীয় হুগলি সেতু, অর্থাৎ বিদ্যাসাগর সেতুর সংস্কারের কাজ। সূত্রের খবর, জুন মাস থেকেই কাজ শুরু হবে। সেতুর একটি লেন বন্ধ রেখে ধাপে ধাপে কাজ চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কলকাতা ও হাওড়ার মধ্যে অন্যতম ব্যস্ত এই সড়কপথে যান চলাচল একেবারে বন্ধ রাখা প্রায় অসম্ভব। সেই কারণেই রাতে একটি লেন বন্ধ রেখেই অধিকাংশ মেরামতির কাজের ভাবনা রয়েছে রাজ্যের। অবশ্য এই নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এই প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ হতে প্রায় ১৫ মাস সময় লাগতে পারে।
নবান্ন সূত্রে খবর, প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজ হবে। একটি অভিজ্ঞ জার্মান সংস্থাকে এই কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। কলকাতার একটি সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করবে তারা। সংস্কারের প্রাথমিক ধাপে সেতুর দুর্বল হয়ে পড়া ২০টি ‘স্টে কেবল’ পরিবর্তনের কাজ হাতে নেওয়া হবে। এই কেবলগুলি থাকার কারণেই সেতুটির ভারসাম্য রক্ষা হয়। সেতুর ভারসাম্য রক্ষার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ‘বিয়ারিং’। কেবল বদলের পর সেগুলি বদলের কাজও শুরু হবে। এই প্রকল্প সফল হলে আগামী দশকগুলির জন্য সেতুর স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
১৯৯২ সালের পুজোর সময় দ্বিতীয় হুগলি সেতু, অর্থাৎ বিদ্যাসাগর সেতু চালু হয়। প্রথম থেকেই মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হয় এই সেতু। এর মাধ্যমে হাওড়া ও কলকাতা শহর দুটির মধ্যে যোগাযোগ রক্ষিত হচ্ছে। সেতুটি সব রকম যানবাহনের ক্ষেত্রেই টোল সেতু হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সেতুটি নির্মাণ করতে মোট ৩৮৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনের অধীনে সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে এই সেতুটি নির্মিত হয়েছিল।
পশ্চিমবঙ্গের প্রধান প্রশাসনিক ভবনের কার্যালয় কলকাতার ‘মহাকরণ’ থেকে হাওড়া শিবপুরের ‘নবান্ন’তে স্থানান্তরিত হওয়ায় বিদ্যাসাগর সেতুর গুরুত্ব আগের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে। প্রতি দিন কয়েক লক্ষ মানুষ এবং হাজার হাজার গাড়ি চলাচল করে এই সেতু দিয়ে। ফলে যান চলাচল একেবারে বন্ধ রাখা প্রায় অসম্ভব। সূত্রের খবর, মূলত রাতে কাজ হলেও কয়েকটি দিন ১০-১২ ঘণ্টার জন্য একটি লেনে সম্পূর্ণ যান চলাচল বন্ধ রাখা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।