• পাকিস্তানের নির্দেশেই চিকেনস নেকে ‘প্রাক্তন বাংলাদেশি গোয়েন্দা’র ঘাঁটি?
    বর্তমান | ১৩ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: পাকিস্তানের নির্দেশেই শিলিগুড়িতে প্রাক্তন বাংলাদেশি ‘গোয়েন্দা’ আশরাফুল আলম? তিনদিন আগে বাগডোগরা সেনা ছাউনির কাছ থেকে ধৃত আশরাফুলের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে এমন অনুমান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। তাঁদের সন্দেহ, ‘চিকেনস নেক’-এর গুরুত্বপূর্ণ স্থানের তথ্য সংগ্রহই ছিল ধৃতের টার্গেট। এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন গোয়েন্দারা। একইসঙ্গে তারা এপারে থাকা কিছু সন্দেহভাজন সংগঠন ও ব্যক্তির ভূমিকা খতিয়ে দেখছে। যারা বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনগুলিকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে বলে সন্দেহ। 

    শিলিগুড়ি শহর সংলগ্ন এলাকা অবস্থিত সেনা ছাউনিগুলির মধ্যে ব্যাংডুবি সেনা ছাউনি অন্যতম। তিনদিন আগে সেই সেনা ছাউনির কাছ থেকে আশরাফুলকে পাকড়াও করা হয়। পুলিস ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে নিজেকে বাংলাদেশি গোয়েন্দা সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী বলে জানায় আশরাফুল। সেই সংস্থার নাম ডিরেক্টর জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) বা প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর। সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। 

    বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর আইএসআইয়ের শীর্ষকর্তারা সেদেশের গোয়েন্দা দপ্তরে গিয়ে মিটিং করে। যেখানে ভারত বিরোধী ‘ব্লু-প্রিন্ট’ তৈরি করা হয় বলে খবর। যাদের টার্গেট ভারতের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ‘চিকেনস নেক’। সম্ভবত পাক গুপ্তচর সংস্থার নির্দেশেই ডিজিএফআইয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী আশরাফুল এখানে এসে ঘাঁটি গেড়েছিল। 

    শুক্রবার বিকেলে বাগডোগরা থানার এমএম তারাই গ্রামে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছিল আশরাফুল। সেনা ছাউনিতে সে উঁকিঝুঁকিও মারে বলে অভিযোগ। স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাকে আটক করে সেনা বাহিনী। তারা অভিযুক্তকে পুলিসের হাতে তুলে দেয়। আদালতের নির্দেশে ধৃত পুলিস হেফাজতে রয়েছে। পুলিসি জেরায় সে বার বার বয়ান বদল করছে। পুলিস সূত্রের খবর, বাংলাদেশের রংপুরে ধৃতের বাড়ি। রাজশাহী জেলা থেকে নদী পেরিয়ে এপারে আসে ধৃত। কখনও সে জানিয়েছে, রংপুরে একটি বাড়িতে কাজ করত। সেই কাজ চলে যাওয়ার পর কাজের খোঁজে রাজশাহী হয়ে সে হেঁটে এপারে এসেছে। আবার কখনও জানাচ্ছে এখান থেকে সে সৌদি আরবে পাড়ি দিত। 

    গোয়েন্দাদের বক্তব্য, বাগডোগরা এলাকায় সেনা ছাউনি, পাশেই বাগডোগরা বিমানবন্দর, বায়ুসেনার ঘাঁটি সহ বেশকিছু নিরাপত্তা এজেন্সির অফিস রয়েছে। আশপাশ এলাকায় বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। কাজেই সেনা ছাউনির কাছে ধৃতের ঘোরাঘুরি রহস্যজনক। পাকিস্তানি এজেন্ট হিসেবে সে এখানে এসেছিল বলেই মনে হচ্ছে। সেনা ছাউনি সহ সামরিক স্থানগুলির তথ্য সংগ্রহই ধৃতের উদ্দেশ্য ছিল বলেই মনে হচ্ছে। তাই ধৃতের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে তদন্ত চলছে। 

    এদিকে, শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গে বাংলাদেশি ও পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনের স্লিপার সেলের খবর আগেই মিলেছে। গত কয়েক বছরে কয়েকজন পাক চরও ধরা পড়েছে। এই অবস্থায় গোয়েন্দাদের র‌্যাডারে কিছু সন্দেহজনক ব্যক্তি ও সংস্থা রয়েছে। গোয়েন্দাদের বক্তব্য, শিলিগুড়ি সহ আশপাশ এলাকায় কিছু সন্দেহভাজন সংগঠন ও ব্যক্তি রয়েছে। তাদের সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)