বুদ্ধ পূর্ণিমায় শতাব্দী প্রাচীন স্বামীনাথের মেলায় মানুষের ঢল
বর্তমান | ১৩ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, ইটাহার: বুদ্ধ পূর্ণিমা তিথিতে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহারের হাঁসুয়া গ্রামে ঐতিহ্যবাহী স্বামীনাথের পুজো ও মেলা শুরু হল। জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই মন্দিরের পুজোকে কেন্দ্র করে বসেছে মেলা। সোমবার সকাল থেকে হাজার হাজার ভক্ত মন্দিরে পুজো দেন। ভগবান বিষ্ণু এখানে স্বামীনাথ রূপে পূজিত হন।
কথিত আছে, দুর্গাপুরের ভূপালপুরের জমিদার স্বর্গীয় নারায়ণ চন্দ্র রায়চৌধুরী হাঁসুয়া গ্রামের জঙ্গল থেকে কষ্টিপাথরের বিষ্ণু মূর্তি পান। পরবর্তীতে ওই স্থানে ভূপালপুরের তৎকালীন জমিদার ভূপালচন্দ্র রায়চৌধুরীর মা দুর্গাময়ী দেবী তাঁর স্বর্গীয়া শাশুড়ির স্মৃতি রক্ষার্থে ১০ কাটা জমির উপরে এই মন্দিরটি স্থাপন করেন। কালের নিয়মে জমিদারি প্রথা না থাকলেও ভূপাল চন্দ্রের উত্তরসূরী অভিষেক রায় চৌধুরীরা এখনও এই পুজো চালিয়ে যাচ্ছেন। সারাবছর নিয়ম করে মন্দিরে পুজো হয়। তবে বাৎসরিক পুজোর দিন কষ্টি পাথরের সাড়ে ৪ ফুটের বিষ্ণু মূর্তিতে সোনা ও রুপোর অলঙ্কার দিয়ে রাজবেশে স্বামীনাথের আরাধনা হয়। মূর্তিটির চার হাতে রয়েছে শঙ্খ, চক্র, গদা ও পদ্ম। কপালে সোনার টিপ, গলায় রুপোর হার, মাথায় সোনার মুকুট এবং পরনে শুভ্র বসন।
মন্দির প্রাঙ্গণে স্বামীনাথের ডান ও বাম দিকে শ্বেত পাথরের রাম-সীতা, লক্ষ্মণ, হনুমান, গণেশ, অষ্টধাতুর রাধা-কৃষ্ণ মূর্তি, জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রা পূজিত হন। মন্দিরের পুরোহিত দীপেন মজুমদার বলেন, সন্তান লাভের আশায় বহু ভক্ত এখানে আসেন। জেলার পাশাপাশি মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর থেকেও ভক্তরা আসেন। প্রতিবেশী রাজ্য বিহারেরও মানুষ আসেন। অভিষেক বলেন, জমিদারি প্রথা মেনে আমরা বুদ্ধ পূর্ণিমা তিথিতে স্বামীনাথের পুজো করে আসছি।
পুজো উপলক্ষ্যে সাতদিনের মেলা বসেছে। মেলায় পাঁচ শতাধিক দোকান বসেছে। মেলায় ইটাহার থানার বিশাল পুলিস সহ এনসিসি ক্যাডারদের মোতায়েন করা হয়েছে। মেলা চত্বরে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। আইসি সুকুমার ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে এদিন মেলা পরিদর্শন করেন এসডিপিও নীলেশ শ্রীকান্ত গাইকর সহ অন্যরা।