রক্ষকই ভক্ষক! চাঞ্চল্য ইংলিশবাজারে, মাদক পাচারকারীর সঙ্গে ‘ডিল’, ধৃত এএসআই
বর্তমান | ১৩ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা, মানিকচক: যে পুলিসের কাঁধে মাদক পাচার রোখার দায়িত্ব, তারাই কিনা কারবারে সাহায্য করার কাজে লিপ্ত! মাদক পাচারে এবার পুলিসের জালে স্বয়ং পুলিস। এক কথায়, রক্ষকই যেন এখানে ভক্ষক। মালদহে ব্রাউন সুগার সহ গ্রেপ্তার দুই পুলিস কর্মী। তাঁদের মধ্যে একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর (এএসআই) পদমর্যাদার পুলিসকর্মী। তাঁর নাম মহম্মদ সফিকুল সেখ। অন্যজন এনভিএফ কর্মী সফিকুল ইসলাম। গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত জেলা পুলিসের নিচুতলার কর্মী থেকে শুরু করে আধিকারিকরা।
মালদহ জেলা পুলিসের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে,ধৃত দুই পুলিসকর্মী মালদহের মানিকচক থানার বালুটোলা ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন। এই ঘটনায় আরও দুই মাদক পাচারকারী সহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করেছে ইংলিশবাজার থানার মিল্কি ফাঁড়ির পুলিস। এই ঘটনায় মালদহ জেলা পুলিসের কর্তারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। পুলিস সুপার প্রদীপ কুমার যাদবকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। মোবাইলে মেসেজ করা হলেও কোনও উত্তর দেননি তিনি।
পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মানিকচক থানায় কর্মরত এএসআই সফিকুল সেখ বর্তমানে গোপালপুর পঞ্চায়েতের বালুটোলা পুলিস ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন। দিন কয়েক আগে মানিকচক থানা থেকে তাঁকে সেখানে পোস্টিং দেওয়া হয়। কাজে যোগ দিয়েই এক মাদক কারবারীকে আটক করেন তিনি। ওই মাদক পাচারকারী ইংলিশবাজার থানার মিল্কি ফাঁড়ি এলাকার বাসিন্দা। অভিযোগ, কেস না দিয়ে সফিকুল ধৃত মাদক পাচারকারীকে ছেড়ে দিয়েছিলেন। বিনিময়ে মোটা টাকা ও মাদক নেন তিনি। কিন্তু বেশকিছুদিন পর ওই মাদক কারবারীকে সেই মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এএসআইকে টাকা দেওয়ার পরও মামলায় নাম থাকায় থানায় আত্মসমর্পণ করেন মাদক পাচারকারী। তিনি এএসআইকে টাকা দেওয়ার কথা জানিয়ে ইংলিশবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে জেলা পুলিস। তদন্তের নেতৃত্ব দেন মালদহ পুলিসের এক কর্তা।
তদন্তে পাচারকারীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা সামনে আসে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। এরপর অভিযুক্ত এএসআই এর মিল্কির বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইংলিশবাজার থানার পুলিস। জেলা পুলিসের এক উচ্চ পদস্থ আধিকারিকের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত এএসআইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁর এবং ওই এনভিএফ কর্মীর কাছ থেকে মাদক সহ প্রচুর টাকা উদ্ধার হয় বলেও পুলিস সূত্রে খবর। আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃত এএসআইকে। - নিজস্ব চিত্র।