নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: রাস্তা তৈরির কাজ নিজের বাড়ি পর্যন্ত করানোর দাবি করেছিলেন বড়দা সুভাষ দে (৫০)। তাই নিয়েই আপত্তি করেছিলেন ছোট ভাই আশুতোষ দে। এই নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে বচসা হয়। তারপর সেই নিয়ে মারপিট। ছোট ভাই আশুতোষ দে, তাঁর ছেলে গৌরব দে এবং তাপস দে বাঁশ নিয়ে চড়াও হয় সুভাষ দে ও তাঁর পরিবারের উপর। বড়দাকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে খুন করে আশুতোষ দে। রবিবার সকালের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় কালীগঞ্জ থানার আকন্দবেড়িয়া এলাকায়। রক্তাক্ত অবস্থায় সুভাষবাবুকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তারপর সেখান থেকে রবিবার রাতেই কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু যাওয়ার পথেই তিনি মারা যান। তারপর মৃতদেহ শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য ফিরিয়ে আনা হয়। রবিবার রাতেই কালীগঞ্জে থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। যদিও ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা পলাতক বলে পুলিস জানিয়েছে। যদিও আশুতোষবাবুর পরিবারের তরফ থেকেও পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে থানায়। কালীগঞ্জ থানার এক আধিকারিক জানান, অভিযোগ জমা পড়েছে। আমরা ঘটনার তদন্ত করে দেখছি।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত সুভাষ দে পেশায় চাষি। তিনি তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও বউমাকে নিয়ে বসবাস করতেন। সুভাষবাবুর বাড়ির পাশেই থাকেন তাঁর ভাই আশুতোষ দে এবং তাঁর পরিবার। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের সহায়তায় সম্প্রতি এলাকায় একটি রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সেই রাস্তা আশুতোষ দে-র বাড়ি পর্যন্ত হওয়ার কথা।
রবিবার ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা রাস্তার মাপজোকে এলে সুভাষ দে তাঁদের কাছে অনুরোধ জানান, রাস্তার দৈর্ঘ্য সামান্য বাড়িয়ে যেন তা তাঁর বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। তবে এই প্রস্তাবে প্রবল আপত্তি জানান আশুতোষ দে ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। সেখান থেকেই শুরু হয় তর্কাতর্কি, যা দ্রুত মারামারিতে পরিণত হয়।
অভিযোগ, আশুতোষ দে, তাঁর ছেলে গৌরব দে এবং তাপস দে বাঁশ নিয়ে চড়াও হন সুভাষবাবুর উপর। সজোরে মাথায় আঘাত করা হয় তাঁকে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথেই সুভাষবাবুর মৃত্যু হয়। পরে তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য শক্তিনগর হাসপাতালে ফেরত পাঠানো হয়। মৃতের ছেলে রাহুল দে জানান, ঘটনার সময়ে আমি পঞ্চায়েতে রাস্তার দৈর্ঘ্য বাড়ানোর আবেদন জানাতে গিয়েছিলাম। সেই সময় আমার বাবাকে মাথায় মারধর করে। বাবার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। আমরা দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।