• জামালপুরের ঐতিহ্যবাহী বুড়োরাজের মেলায় এবার ভক্ত সমাগম কম, হতাশ ব্যবসায়ীরা
    বর্তমান | ১৩ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: পূর্বস্থলীর জামালপুরের ঐতিহ্যবাহী বুড়োরাজের  পুজোয় প্রতিবছরই ব্যাপক ভক্ত সমাগম হয়। তবে, এবছর বুড়োরাজের মেলায় সেই সংখ্যা কম ছিল। অস্ত্র নিয়ে বুড়োরাজের মেলায় প্রবেশ রুখতে এক হাজারের বেশি পুলিস নজরদারি চালিয়েছে। পুরনো সব রেকর্ড ভেঙে এবার প্রায় সাড়ে ১২ হাজার মানুষ বাবা বুড়োরাজের সন্ন্যাসী হয়েছেন। বুড়োরাজ মেলা কমিটির সদস্য বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এবারে আগের বছরের তুলনায় কম ভক্ত সমাগম হয়েছে। আসলে বর্তমান পরিস্থিতির কারণেই হয়তো ভক্তের সংখ্যা কমে গিয়েছে।

    জানা গিয়েছে, পূর্বস্থলী-২ব্লকের জামালপুরে বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে বুড়োরাজের পুজোয় প্রতিবছর লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয়। পূর্ব বর্ধমান ছাড়াও মূলত নদীয়া, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ থেকে ভক্তরা বিভিন্ন প্রকার বাজনা নিয়ে আসেন। তারসঙ্গে অস্ত্র নিয়ে মেলায় আসাটাও প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভক্তদের একাংশ রামদা, ভোজালি, টাঙি থেকে শুরু করে বোমা পর্যন্ত নিয়ে আসে। প্রতি বছর এমনই প্রথা চলে আসছে। এবার মেলায় অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও নজর এড়িয়ে অনেককেই রামদা নিয়ে নাচতে নাচতে মেলায় প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছিল। 

    কথিত আছে, স্থানীয় যদু ঘোষ নামে এক ব্যক্তির গোয়ালে একাধিক গোরু ছিল। যারমধ্যে সবচেয়ে বেশি দুধ দিত ‘শ্যামলী’। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে শ্যামলী দুধ দিচ্ছিল না। একদিন যদু শ্যামলীর পিছু নিয়ে দেখেন, জামালপুরের জঙ্গলের ভিতর একটি ঢিবির উপর আপনা আপনিই ওই গোরুর বাঁট থেকে দুধ পড়ছে। সেই দৃশ্য দেখে তিনি তড়িঘড়ি পুরোহিত মধুসূদন চট্টোপাধ্যায়কে বিষয়টি জানান। বুদ্ধ পূর্ণিমার আগের রাতে দু’জনেই নাকি বাবা বুড়োরাজের স্বপ্নাদেশ পান। সেই থেকে এই বিশেষ দিনে পুজো শুরু হয়। ব্যবসায়ীরা বলেন, সারা বছর এই মেলার দিকে তাকিয়ে থাকি আমরা। মেলায় ভিড় কম ছিল। আমাদের বিক্রিও কম হচ্ছে। 

    পূর্বস্থলীর উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে ভিড় কম রয়েছে। তবে, জল ঢালার জন্য ভক্তদের ভিড় ভালোই ছিল। আসলে অনেকের ধান কাটা হয়নি। তাই হয়তো এবার ভক্তের সংখ্যা কমে গিয়েছে।

    এদিন মেলায় বিভিন্ন জেলা থেকে প্রচুর মানুষ বাজনা সহকারে অস্ত্র নিয়ে মেলায় পুজো দিতে আসেন। কেউ যাতে মেলায় অস্ত্র সহ ঢুকতে না পারে, তারজন্য পুলিসের তরফে চারটি জায়গায় চেকপোস্ট করা হয়েছে। ছাতনীর মোড়, সানঘোষ পাড়া, নিমদহ ঘোষ পাড়া, জামালপুর মোড় ও পলাশবেড়িয়া এলাকায় চেকপোস্টগুলি রয়েছে। প্রতিটি চেকপোস্টে পুলিস মোতায়েন ছিল।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)