স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া সন্দেহে বন্ধুকে কুপিয়ে খুন, গ্রেপ্তার
বর্তমান | ১৩ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: বন্ধুর সঙ্গে স্ত্রীর পরকীয়া চলছে, এই সন্দেহের বশে চলছিল দাম্পত্য অশান্তি। শেষমেশ আক্রোশ মেটাতে বন্ধুকে কুপিয়ে খুন করল এক যুবক। সোমবার হুগলির পোলবায় ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতের নাম রাজ বর্মন (৩০)। নদীয়ার দেবগ্রামের বাসিন্দা তিনি। রাজকে খুনের অভিযোগে অভিজিৎ সরকারকে গ্রেপ্তার করেছেন তদন্তকারীরা। আজ তাকে আদালতে পেশ করা হবে। তদন্তের স্বার্থে তাকে ৫ দিন হেফাজতে চাইবে পোলবা থানার অফিসাররা।
বছর চারেক আগে নবদ্বীপের অভিজিতের সঙ্গে বিয়ে হয় পোলবার সাগরিকা সরকারের। বিয়ের পর নবদ্বীপে শ্বশুড়বাড়িতে বসবাস শুরু করেন তিনি। সেখানে যাতায়াত ছিল রাজের। সাগরিকার সঙ্গেও আলাপ হয় ওই যুবকের। সেই আলাপ ক্রমে বন্ধুত্বে পরিণত হয়। ক্রমশ তা আরও ঘনিষ্ঠ হয় বলে পুলিস সূত্রে খবর। বিষয়টি জানতে পারেন স্বামী অভিজিৎ। এরপর থেকে দাম্পত্য জীবনে অশান্তি শুরু হয়। ইদানিং তা আরও বাড়তে শুরু করে। গত শুক্রবার রাতে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে পোলবায় চলে আসেন সাগরিকা। পরের দিন সেখানে আসেন তাঁর স্বামীও। পুলিস জেনেছে, সেখানেও দু’পক্ষের অশান্তি চরমে ওঠে।
রাজের সঙ্গে সাগরিকার কী সম্পর্ক? বোঝাপড়ার করতে রাজকে পোলবা ডেকে পাঠানোর জন্য সাগরিকাকে চাপ দিতে থাকে অভিজিৎ। রবিবার দুপুরে রাজকে ফোন করে ডাকেন সাগরিকা। রাতেই মহানাদের একটি শিবমন্দিরে চলে আসেন রাজ। কিন্তু, বাড়িতে যাননি তিনি। এদিন সকালে অভিজিৎ স্ত্রীর কাছে জানতে চান, কেন রাজ এল না? ফের ফোন করার কথা বলেন স্ত্রীকে। তখনই তিনি জানতে পারেন, শিবমন্দিরে রয়েছেন রাজ। এরপরেই বেরিয়ে যান অভিজিৎ। কিছু একটা ঘটনা ঘটতে পারে অনুমান করেই অন্য রাস্তা দিয়ে আগে শিবমন্দিরে পৌঁছে যান সাগরিকা। এমন সময় প্রকাশ্য রাস্তাতেই ছুরির কোপে রাজকে ঘায়েল করে পালিয়ে যান অভিজিৎ। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন যুবক। সাগরিকাই আর্তনাদ শুরু করলে আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে আসেন। যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পোলবা থানার পুলিস। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। তদন্তে নেমে পুলিস অভিজিৎকে গ্রেপ্তার করে। গৃহবধূর দাবি, ‘আমি অনেকবার বলেছিলাম রাজকে চলে যেতে, কিন্তু যায়নি।’
সাগরিকার অভিযোগ, ‘শ্বশুরবাড়িতে আমার উপর নির্যাতন চলত। রাজ বলেছিল, অভিজিৎকে বুঝিয়ে বলব। যদি অভিজিৎ সম্পর্ক ছিন্ন করে। তাহলে আমি সঙ্গে করে নিয়ে যাব। আমার জন্যই ও মরে গেল।’ সাগরিকার মা কল্যাণী সরকার বলেন, আমার মেয়ের উপরে অত্যাচার চলত। সেখান থেকেই রাজের উপর হয়তো নির্ভরশীলতা তৈরি হয়েছিল।