• নেশার আসরের প্রতিবাদ করায় মারধর যুবককে, পাড়ায় ঢুকে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব
    বর্তমান | ১৩ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: মাঠের মধ্যে রমরমিয়ে চলছে নেশার ঠেক। এক যুবক প্রতিবাদ করায় তাঁকে মারধরের পাশাপাশি সশস্ত্র অবস্থায় পাড়ায় ঢুকে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। রবিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার শিবপুরের নরসিংহ বোস লেনে। দুষ্কৃতীরা পাড়ায় ঢুকে ইট, কাচের বোতল ছুড়ে একাধিক যুবককে মারধর করে বলে অভিযোগ। রেহাই পাননি মহিলারাও। পরিস্থিতি সামলাতে ছুটে যায় শিবপুর থানা ও হাওড়া থানার বিশাল পুলিস বাহিনী।

    স্থানীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে, রবিবার রাত দশটা নাগাদ রামকৃষ্ণপুরের চারু সিংহ লেনের ঘেসের মাঠে নেশার আসর বসেছিল। অন্যান্য দিনের মতোই মদ, গাঁজা সেবন করছিল বাইরে থেকে আসা দুষ্কৃতীরা। ওই এলাকা দিয়ে ফিরছিলেন মহম্মদ ফৈয়াজ নামের এক যুবক। তিনি প্রতিবাদ করেন। এরপরেই যুবকের উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। সেখান থেকে পালিয়ে জেলিয়াপাড়ার বাড়িতে চলে আসেন ফৈয়াজ। রাত গভীর হলে ২০ থেকে ২৫ জনের দুষ্কৃতী দল ধারালো অস্ত্র নিয়ে পাড়ায় ঢোকে। মদ্যপ অবস্থায় বিভিন্ন বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় দলটি। একাধিক বাড়ি লক্ষ্য করে ইট ও কাচের বোতল ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। এরপরেই রুখে দাঁড়ান স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রতিবাদ করলে তাঁদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আক্রান্ত হন মহিলারাও। আক্রান্ত সামিনা খাতুন বলেন, ‘আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। সে কারণেই আমার ছেলে ও স্বামীকে বেধড়ক মারধর করেছে দুষ্কৃতীরা। আমাকেও খুব মেরেছে। ভীষণ আতঙ্কে রয়েছি।’ খবর পেয়ে রাতেই বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় হাওড়া ও শিবপুর থানার পুলিস। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ বেগ পেতে হয় পুলিসকে। কয়েকজন দুষ্কৃতীকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

    সোমবার ঘেসের মাঠে গিয়ে দেখা গেল, চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ফাঁকা মদের বোতল, গাঁজার প্যাকেট সহ নেশার বিভিন্ন সামগ্রী। এলাকাটি হাওড়া থানার অন্তর্গত। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে রমরমিয়ে নেশার ঠেক চলছে এলাকায়। সন্ধে নামতেই বাইরে থেকে দুষ্কৃতীরা এসে ভিড় করে। স্থানীয়দের ওই এলাকা এড়িয়ে যেতে হয়। কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। পুলিসের গাড়ি টহল দেওয়া তো দূর, পুলিসি মদতেই নেশার ঠেক চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়দের একাংশ। অমিতাভ দে নামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘বছর তিনেক আগে ঠেক বন্ধ করা নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলাম। আমাকে মারধর করা হয়েছিল। থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কোনও লাভ হয়নি।’ হাওড়া সিটি পুলিসের এক কর্তা বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নেশার আসর বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)