• শান্তির দাবিতে মিছিল ঘিরে অশান্তি রাজপথে, সংঘর্ষও
    এই সময় | ১৩ মে ২০২৫
  • এই সময়: শান্তির মিছিলে অশান্তি! আশঙ্কা সত্যি করে সোমবার মৌলালি থেকে নাগরিকদের একাংশের ডাকে যুদ্ধ–বিরোধী শান্তি মিছিলে ‘হামলা’ চালানোর অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলার সজল ঘোষ।

    অভিযোগ, শান্তি চেয়ে যাঁরা মিছিল করতে চাইছিলেন, তাঁদের গায়ে পোড়া মোবিল, ডিজ়েল ছোড়েন বিজেপি কর্মীরা। যদিও সেখানে বিজেপির কোনও পতাকা ছিল না। পরিস্থিতি সামাল দিতে শান্তি মিছিলে অংশগ্রহণকারী থেকে সজল–সহ বিজেপি কর্মীদের আটক করে পুলিশ।

    প্রায় ৮০ জনকে লালবাজার সেন্ট্রাল লক আপে নিয়ে যাওয়া হয়। মুক্তির দাবিতে দু’পক্ষেরই বিপুল কর্মী–সমর্থক লালবাজারের বাইরে জমায়েত করতে শুরু করেন। রাতে যাতে ‍নতুন করে কোনও গোলমাল আবার না–হয়, তার জন্য সজাগ ছিল পুলিশ।

    এ দিন বিকেল তিনটে থেকে এই মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল নাগরিক সমাজের একাংশের তরফে। যুদ্ধের জিগির তুলে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা–সহ পহেলগামের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে না–পারার ইস্যুকে ভুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে এই মিছিলকারীদের দাবি।

    পাল্টা বিজেপি কাউন্সিলার সজল ঘোষ সেখানে জমায়েত করার ডাক দেন। শান্তি মিছিলের অন্যতম অংশগ্রহণকারী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইন্দ্রানুজ রায় বলেন, ‘আমরা শান্তি চেয়ে মিছি‍ল শুরু করতে যাচ্ছিলাম। তখনই বিজেপি–আরএসএসের ক্যাডাররা আমাদের উপরে আক্রমণ করে। আমাদের অনেকের গায়ে পোড়া মোবিল–ডিজ়েল ছড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রাণে মারার চেষ্টা করে।’

    পাল্টা সজলের দাবি, ‘এরা সব পাকিস্তানের দালাল। ভারত যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, জোরদার জবাব দিচ্ছে, তখন এরা পাকিস্তানের পক্ষে নেমে পড়েছে।’

    দু’পক্ষই অবশ্য পুলিশি হেনস্থার অভিযোগ তুলেছে। বিজেপি কর্মীদের বাঁশ নিয়ে তাড়া করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। দু’পক্ষকে সরাতে বলপ্রয়োগ করতে হয় পুলিশকে। এ দিকে, সজলের পাশে দাঁড়িয়ে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘মৌলালিতে সেকু–মাকুরা একটা মিছিল করছিল, সেই মিছিল প্রো–পাকিস্তানি মিছিল।

    এটা প্রো–ইন্ডিয়ান মিছি‍ল নয়। সেখানে কাউন্সিলার সজল ঘোষের নেতৃত্বে সাধারণ মানুষ তেরঙ্গা যাত্রা করতে জড়ো হয়েছিলেন। মনোজ ভার্মার নেতৃত্বাধীন কলকাতা পুলিশ সেকু–মাকুদের পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদীদের গ্রেপ্তার করে লালবাজারে নিয়ে গিয়েছে।’

    শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে পাল্টা সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ বলেন, ‘যে নিজের স্বার্থের জন্য প্রথমে কংগ্রেস, তারপরে তৃণমূল, এখন বিজেপি করতে পারেন, সেই নেতা পাকিস্তান থেকে ভালো অফার পেলে পাকিস্তানেও চলে যেতে পারেন। তাই শুভেন্দু অধিকারীর থেকে আমরা শুনব না, কে প্রো–পাকিস্তানি, আর কে নয়।’

    এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডলে দীর্ঘ পোস্ট করেছে সিপিআইএমএল লিবারেশন। এ দিনের মিছিল ভেস্তে গেলেও আজ সিপিএমের তরফেও শান্তি মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে।

  • Link to this news (এই সময়)