এই সময়: সংঘর্ষ–বিরতি ঘোষণা হলেও পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে বৈঠক করে নির্দেশ দিয়েছিলেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেন না বাড়ে। একই সঙ্গে নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল, যাতে খাদ্যদ্রব্য যথেষ্ট পরিমাণে মজুত থাকে।
রবিবার মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্দেশ দেন, আগামী তিন মাস যেন জেলাগুলিতে খাদ্যদ্রব্যের ঘাটতি যেন না হয়। সোমবার থেকেই সেই কাজ শুরু করে দিল প্রশাসন।
জেলায় মাসে কোন পণ্যের চাহিদা কেমন, কতটা এই মুহূর্তে মজুত রয়েছে, তার হিসেব–নিকেশ যেমন শুরু হয়েছে, তেমনই আগামী দিনে আর কতটা প্রয়োজন হতে পারে, তারও হিসেব তৈরি করা হচ্ছে। কলকাতা-সহ জেলাগুলিতে এ দিনও টাস্কফোর্স এবং প্রশাসন বাজারগুলিতে অভিযান চালায়।
প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বাজারে জিনিসপত্রের দাম মোটের উপর স্বাভাবিক রয়েছে। আনাজের দাম বেশ নীচের দিকেই। আগামী দিনে তা যাতে না বাড়ে, সেই জন্য বিক্রেতাদের সতর্ক করা হয়েছে।
নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য নিয়ন্ত্রণে মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি টাস্কফোর্স সোমবার উল্টোডাঙার পাইকারি এবং খুচরো বাজারে অভিযানে নামে। টাস্কফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁরা ছোট–বড় সব বাজারেই অভিযান চালিয়েছেন।
আপাতত দাম নিয়ে সমস্যা নেই। কারণ পটল-ঢেঁড়শ-ঝিঙের মতো গ্রীষ্মের আনাজের দাম পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি ১৮-২০ টাকার মধ্যে রয়েছে। খুচরো বাজারে তা ২৫ টাকা কেজিতে বিকোচ্ছে। পেঁয়াজও এখন বেজায় সস্তা। গত বছরে এই সময়ে পেঁয়াজের দাম ছিল ঊর্ধমুখী।
রবীন্দ্রনাথ জানান, এ দিন ভালো জাতের পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সেটাই খুচরো বাজারে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। খুচরো বিক্রেতাদের জানানো হয়েছে, ১৫ টাকায় কিনে তা ২০ টাকার বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না। আনাজের পাশাপাশি চালের বাজারেও হানা দেয় টাস্কফোর্স। গত কয়েক মাসে চালের দাম সাধারণের নাগাল ছাড়িয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের দাবি, সেই দামও আপাতত নাগালে এসেছে।
বিভিন্ন জেলার বাজারেও এ দিন পুলিশ এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট হানা দেয়। মূলত জেলায় আনাজ এবং অন্যান্য জিনিসপত্র কোথা থেকে আসে এখন তা যথেষ্ট মজুত রয়েছে কি না, তার খোঁজ নেওয়া হয়। চাল জেলায় যথেষ্ট উৎপাদন হচ্ছে কি না, না হলে কোথা থেকে আসছে, সেই সাপ্লাই লাইন ঠিক থাকছে কি না, তা নিয়মিত খোঁজখবর করা হবে বলেও জানান তাঁরা।
জেলায় উৎপাদিত আনাজ, চাল বা অন্য কোনও পণ্য রাজ্যের মধ্যে সরবরাহ করা গেলেও ভিন রাজ্যে এবং ভিন দেশে পাঠানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জেলার ব্যবসায়িক সংগঠনগুলিকে জানানো হয়েছে, কোনও পণ্যের অভাব হলে তা যেন সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের নজরে আনা হয়।