• এবার পাকিস্তানে বন্দি পূর্ণমের দ্রুত মুক্তির সম্ভাবনা উজ্জ্বল
    এই সময় | ১৩ মে ২০২৫
  • অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়

    সংঘর্ষ বিরতির পরে পাকিস্তানি রেঞ্জার্সের হাতে বন্দি বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউয়ের মুক্তির সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল হলো বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশ। পাঞ্জাবের ফিরোজ়পুর সীমান্তে ডিউটি চলাকালীন ‘ভুল করে’ সীমান্ত পার করে পাক সীমান্তে ঢুকে পড়লে পূর্ণমকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানি রেঞ্জার্স।

    তারপর থেকে ২০ দিন ধরে তিনি বন্দিই রয়েছেন। এর মধ্যে রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগর সীমান্তে এক পাক রেঞ্জারকেও বেআইনি ভাবে সীমান্ত পারের অভিযোগে বিএসএফ পাকড়াও করে। সোমবার নয়াদিল্লিতে সরকারি সূত্রের খবর, সীমান্তে দু’দেশের সেনার সংঘর্ষের পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পরেই হুগলির রিষড়ার বাসিন্দা পূর্ণমের মুক্তির সম্ভাবনা বেড়েছে।

    ভারতের হাতে আটক পাক রেঞ্জারের মুক্তির বিনিময়েই নিজের দেশে ফিরতে পারেন পূর্ণম। তাঁর মুক্তির বিষয় নিয়ে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শীর্ষ স্তরে চলতে থাকা আলোচনা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে বলেও দাবি জানানো হয়েছে সরকারি সূত্রে।

    ২০ দিন আগে পাঞ্জাবের ফিরোজপুর এলাকার সীমান্তে খেতে কর্মরত ভারতীয় কৃষকদের পাহারা দেওয়ার সময়ে ‘ভুল করে’ পাকিস্তানের ভূখন্ডে ঢুকে পড়েছিলেন পূর্ণম। এর পরে বারবার ফ্ল্যাগ মিটিং হলেও পূর্ণমকে এখনও মুক্ত করা যায়নি। এই আবহে জল অন্যদিকে গড়াতে শুরু করে রাজস্থানে এক পাক রেঞ্জার ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পরেই।

    সূত্রের দাবি, নিজেদের রেঞ্জারকে ফিরে পেতে মরিয়া পাকিস্তান। এই মর্মেই তারা ভারতীয় জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউকে ভারতে ফেরত পাঠাতে রাজি। এই পয়েন্ট থেকেই শুরু হয়েছে দু’তরফের দড়ি টানাটানি।

    প্রবীণ সেনা ও আধাসেনা আধিকারিকদের অনেকেই বলছেন, বিএসএফ-র জওয়ান পূর্ণম যেখানে আটক আছেন, সেই দেশটির নাম পাকিস্তান। স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তানের দ্বিচারিতা ও বিশ্বাসঘাতকতার তালিকা বিরাট লম্বা। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বর্তমান সংঘর্ষের আবহ, যেখানে জঙ্গিদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে ভারতের প্রত্যাঘাতে নাজেহাল হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের সেনা ও সরকার।

    এই ফ্যাক্টরগুলি মাথায় রেখেই বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমের মুক্তি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত করার আগে নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী বা প্রশাসনের কোনও কর্তা বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং আমলারা এই বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ।

    এই পরিস্থিতিতে সোমবার পূর্ণমের মুক্তি প্রসঙ্গে আশা প্রকাশ করেছেন তাঁর স্ত্রী রজনী সাউও। রিষড়ায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রজনী বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত না আমার স্বামী বাড়ি ফিরছেন, ততদিন আমাদের রাতে ঘুম নেই। ২০ দিন হয়ে গিয়েছে উনি পাকিস্তানে বন্দি। দু’দেশের ডিজিএমও স্তরের আলোচনায় ভালো কিছু হবে, এই আশা বুকে নিয়েই বেঁচে আছি আমরা। সংঘর্ষ তো এখন থেমে গিয়েছে।

    এই পরিস্থিতিতে উনি(পূর্ণম) রেহাই পেলে আমরা খুশি হই। আর কত দিন আমরা ধৈর্য রাখব বলুন?’ এই প্রসঙ্গেই পূর্ণমের স্ত্রী দাবি করেন, স্বামীর মুক্তির বিষয় নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। যে কোনও ভাবে তাঁকে যাতে ফিরিয়ে আনা যায়, সেই বিষয়টি তিনি দেখছেন বলে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন রজনীকে। পাশাপাশি পূর্ণমের পরিবারের সদস্যদের পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছেন মমতা।

  • Link to this news (এই সময়)