মা–বাবার বিয়ের সাক্ষী থাকল সন্তানরা, গয়েরকাটার খুট্টিমারিতে গণবিবাহে অংশ নিলেন ১৫ জোড়া দম্পতি...
আজকাল | ১৩ মে ২০২৫
অতীশ সেন, ডুয়ার্স: কনের সাজে বিয়ের পিঁড়িতে বসে রয়েছেন বহু মা। মা–বাবার বিবাহের সাক্ষী থাকতে পেরে অভিভূত সন্তানরা। সোমবার এমনি দৃশ্যের সাক্ষী থাকল বানারহাট ব্লকের শালবাড়ি–১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষজন। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি জেলার ১৫ জোড়া দম্পতি এদিন নববধূ–বরের সাজে উপস্থিত হয়েছিলেন খুট্টিমারি বিট অফিস সংলগ্ন এলাকার সারনা শাদি–র মঞ্চে। এদের অনেকেই একাধিক সন্তানের জননী। কারও বয়স ২২ তো কারও আবার ৪২। অনেকেরই বিয়ের সাক্ষী থাকল তাদের সন্তান সহ নাতি নাতনিরাও। আয়োজকদের পক্ষ থেকে গণবিবাহের মধ্য দিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া প্রত্যেক বর–কনেকে তাদের আগামী ভবিষ্যতের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।
অনেক আদিবাসী দম্পতি আনুষ্ঠানিভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ না হয়েও ঘর করেন। আদিবাসী সমাজের রীতি অনুযায়ী নিজের ছেলে মেয়ের আনুষ্ঠানিক বিবাহ অনুষ্ঠান আয়োজনের পূর্বে পিতামাতাকে অবশ্যই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়। তবেই তাদের ছেলে–মেয়ের বিবাহ অনুষ্ঠানে সমাজ অংশ গ্রহণ করে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন সমস্ত আদিবাসী যুবক–যুবতীই আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করতে ইচ্ছুক। কিন্তু এদের অনেকেরই পিতা–মাতার আনুষ্ঠানিক বিয়ে না হওয়াতে এদের বিয়েতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছিল। বিবাহ অনুষ্ঠান মানেই বিপুল খরচ। মধ্য বয়সে এসে এই খরচ যোগানোর ক্ষমতা অনেকেরই থাকে না। এর পরেই ছেলে–মেয়েকেও দিতে হবে বিয়ে। ফলে এমন জুটিদের বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে আয়োজন করা হয় গণবিবাহের। কনের সাজে বিয়ের পিড়িতে বসে অনেক মা’কেই বাচ্চা সামলাতে দেখা যায়। এই ধরনের বিবাহ অনুষ্ঠানে অবশ্য কিছু যুবক–যুবতীও অংশ নেয়। তারাও নামমাত্র খরচে গণবিবাহের অনুষ্ঠানেই সমস্ত সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে সেরে ফেলেন নিজেদের বিয়ে। এই ধরনের অনুষ্ঠানে বিয়ে করার ফলে তারা পেয়ে যান বিভিন্ন উপহার। প্রতি বছরই ডুয়ার্স জুড়ে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে এমন গণবিবাহের আয়োজন করা হয়।