• কলকাতায় যুদ্ধবিরোধী মিছিলে পেট্রল-ডিজেল-মোবিল ছোড়ার অভিযোগ, অস্বীকার করল বিজেপি
    আনন্দবাজার | ১৩ মে ২০২৫
  • নাগরিক মঞ্চের ডাকা যুদ্ধবিরোধী শান্তি মিছিলে অশান্তির ছবি। উঠল পেট্রল-ডিজেল ছোড়ার অভিযোগ। ‘দাওয়াই’ দেওয়ার হুমকিও শোনা গেল বিজেপি নেতা সজল ঘোষের মুখে! তবে পেট্রল-ডিজেল ছোড়ার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা অস্বীকার করেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠল প্রশ্ন। সব মিলিয়ে সোমবার কলকাতায় নাগরিক মঞ্চের ডাকা যুদ্ধবিরোধী শান্তি মিছিলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়।

    সোমবার নাগরিক মঞ্চের ডাকা যুদ্ধবিরোধী শান্তি মিছিল শুরু হওয়ার কথা ছিল মৌলালি থেকে। তার আগে সেখানে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন, ছাত্র-যুব সংগঠন এই জমায়েতের উদ্যোক্তা। অতিবামপন্থী সংগঠনগুলির আহ্বানেই এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। মৌলালিতে জমায়েত, তার পর সেখান থেকে মিছিল— এই ছিল কর্মসূচি। মিছিলের উদ্যোক্তা অমিতাভ ভট্টাচার্য জানান, প্রশাসনকে আগেই এই কর্মসূচি নিয়ে অবহিত করা হয়েছিল। তবে এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত দু’-তিন ধরে সমাজমাধ্যমে চাপানউতোর চলছিল। বিজেপির একটা অংশের পক্ষ থেকে সরাসরি বলা হয়, এই ধরনের দেশবিরোধী কর্মসূচির বিরোধিতা তারা সামনাসামনি করবে।

    সেই আবহেই সোমবার বেলা ৩টে নাগাদ মৌলালিতে জমায়েত শুরু হয়। ঠিক ছিল সাড়ে ৩টে নাগাদ মিছিল শুরু হবে। উদ্যোক্তাদের দাবি, মিছিল শুরু হওয়ার আগে সজলের নেতৃত্বে একদল লোক হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে এসে তাঁদের উপর চড়াও হন। এ-ও অভিযোগ, দেশদ্রোহী দাবি তুলে তাঁদের লক্ষ্য করে জ্বালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে পেট্রল, ডিজেল, মোবিল ছোড়া হয়েছে। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন মীরাতুন নাহার, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্টেরা।

    অশান্তি শুরু হতেই প্রাথমিক ভাবে সজলের নেতৃত্বে যাঁরা জমায়েতে এসেছিলেন তাঁদের আটকায় পুলিশ। পুলিশি বাধার মুখে পড়ে তাঁরা সরে যান। দাবি, তার পরেই সোমবারের কর্মসূচির উদ্যোক্তাদের জানানো হয়, তাঁদের আর মিছিল করতে দেওয়া হবে না। উদ্যোক্তারা পুলিশকে জানান, মিছিল করতে না দিলে, মৌলালিতেই তাঁরা অবস্থান শুরু করবেন। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। পরে বিক্ষোভকারীদের আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় লালবাজারে। রাত পর্যন্ত সেখানেই তাঁদের আটকে রাখা হয়। অমিতাভের দাবি, তাঁদের ৬৩ জনকে আটক করে লালবাজারের সেন্ট্রাল লক্‌আপে নিয়ে যাওয়া হয়।

    পেট্রল, ডিজেল ছোড়ার যে অভিযোগ উঠেছে তা সরাসরি অস্বীকার করেন সজল। তাঁর দাবি, ‘‘আমরা কোনও পেট্রল-ডিজেল ছুড়িনি। তবে দেশবিরোধী কথা কেউ যদি বলেন, তবে তার দাওয়াই যেমন হয় তেমনই দেওয়া হবে।’’ ঘটনাচক্রে, দুই পক্ষই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। অমিতাভের বক্তব্য, ‘‘আমরা যুদ্ধবিরোধী শান্তি মিছিল ডেকেছিলাম। সেখানে বিজেপির লোক হামলা চালাতে এল। কিন্তু পুলিশ তাঁদের রক্ষা করল।’’ সজলের দাবি, ‘‘দেশের বিরুদ্ধে কথা বলা এই শক্তিকে রক্ষা করেছে কলকাতা পুলিশ।’’ যদিও পুলিশ এ নিয়ে বিস্তারিত কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। কত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই ব্যাপারে কোনও পরিসংখ্যান দেওয়া হয়নি। তবে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ঘটনায় কিছু লোককে আটক করা হয়েছিল। রাতেই যাতে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া যায়, সেই প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)