ময়নাগুড়ি থেকে উদ্ধার হলো সাত মাসের শিশু কন্যা ও তার বাবার দেহ। মৃত যুবকের নাম দীপক রায় (৩৪)। ময়নাগুড়ি ব্লকের দোমোহনী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সিঙ্গি মারি গ্রামে মঙ্গলবারের ঘটনা। এ দিন সকালে ঘর থেকে উদ্ধার হয় দু’জনের দেহ। ইতিমধ্যেই ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, শিশু কন্যাকে হত্যার পর আত্মঘাতী হয়েছেন দীপক।
পরিবার সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগেই বেসরকারি সংস্থার কর্মী দীপক রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল রামসাই এলাকার বাসিন্দা দীপা রায়ের। কয়েক মাস আগেই ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন দীপা। অভিযোগ, কন্যা সন্তানটির কিছু শারীরিক সমস্যা ছিল। তাই নিজের সন্তানকে নিয়ে সবসময় চিন্তায় ছিলেন ওই দম্পতি। শিশুর যখন তিন মাস বয়স, সেই সময় বাপের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন দীপা। এর পর মা হারা শিশু কন্যাকে নিজের কাছেই মানুষ করছিলেন দীপক। দীপকের পাশাপাশি তাঁর মা-বাবাও শিশুটির যত্ন নিতেন।
দীপকের বাবা সনাতন রায় জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে উঠে শিশুটিকে খাইয়ে ফের দরজা বন্ধ করে দেন দীপক। কিন্তু অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ার পর কোনও সাড়াশব্দ না পাওয়ায় বেলা এগারোটা নাগাদ দরজা ভাঙেন সনাতন। এর পর ঘরের ভেতরে ঢুকতেই বিছানায় নাতনির নিথর দেহ ও পাশে ছেলেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন। ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে আসে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ। দীপকের বাবার দাবি, দীপার মৃত্যুর পর দীপক মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও সন্তানকে ভালোভাবে চিকিৎসা করানোর জন্য বাইরে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। সন্তানকে নিয়ে সবসময় দুশ্চিন্তা করতেন দীপক।
দীপকের দিদি মাম্পি রায় বলেন, ‘শিশুটির শারীরিক অনেক সমস্যা ছিল। কিন্তু তার চিকিৎসার ক্ষেত্রে খামতি রাখেনি ওর বাবা-মা। তবে হঠাৎ করে কেন এমন ঘটল সেটা আন্দাজ করতে পারছি না।’ স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা অর্চনা ঘোষ বলেন, ‘মর্মান্তিক ঘটনা। একই সঙ্গে বাবা ও মেয়ের মৃত্যু সত্যি মেনে নেওয়া যায় না।’