তিন মাসের শস্য মজুতের ভাঁড়ারই নেই, কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে রাজ্যের কাছে সাহায্য চাইলেন রেশন ডিলাররা
প্রতিদিন | ১৪ মে ২০২৫
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: তিন মাসের খাদ্যশস্য একসঙ্গে মজুত রাখার মতো ভাণ্ডার নেই। সেই কথা জানিয়ে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশীকে চিঠি দিলেন রেশন ডিলাররা। সঙ্গে দরকারে ভাড়া বাড়ি জোগাড় করে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছেও আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
সম্প্রতি কেন্দ্র সরকার আবহাওয়া পরিস্থিতির অবনতির কথা বলে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার আওতায় আগাম ছ’মাসের শস্য মজুত রাখার কথা বলেছে রেশন ডিলারদের। সেখানে রাজ্য সরকার ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উদ্ভুত সামরিক পরিস্থিতির কথা বলে রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর জন্য তিন মাসের খাদ্যশস্য মজুত রাখার কথা জানিয়েছে। শুধু নির্দেশই দেয়নি, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কোথায় কোন গুদামে কত শস্য মজুত রাখা যায়, রেশন ডিলারদের কাছে তার তথ্য চেয়ে পর্যাপ্ত শস্য সরবরাহের কথা জানিয়েও দিয়েছে। কিন্তু রেশন ডিলারদের বক্তব্য, তাদের ছ’মাসই হোক বা তিন মাস, তাঁদের কাছে দু’মাসের বেশি খাদ্যশস্য মজুত রাখার মতো গুদাম বা ভাণ্ডার নেই। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারেরই দ্বারস্থ হয়েছেন ডিলাররা। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যই বরং ঘর ভাড়ার ব্যবস্থা করে দিক। তা হলে সরকারি গুদামে রেশনের শস্য মজুত করার ব্যবস্থা করে নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করে দিক।
এ রাজ্যের জন্য ৩ লক্ষ ৩০ হাজার মেট্রিক টনের হিসাবে প্রাথমিকভাবে তিন মাসের জন্য ৯ লক্ষ ৯২ হাজার মেট্রিক টনের কিছু বেশি খাদ্যশস্য কেন্দ্রের ভাঁড়ার থেকে তুলে নিতে বলেছে। সেক্ষেত্রে জুন, জুলাই, আগস্ট এই তিন মাসের শস্য মে মাসের মধ্যে তুলে নিতে হবে। পরের তিন মাস অর্থাৎ নভেম্বর পর্যন্ত শস্য জুন মাসের মধ্যে তুলে নিতে হবে। রেশন ডিলারদের সংগঠন ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসুর কথায়, “আগাম ছ’মাসের শস্য মজুত রাখার মতো শস্যভাণ্ডার আমাদের নেই। কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারকেই আমরা তা জানিয়েছি। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারই বরং আমাদের সাহায্য করুক।” তাঁর বক্তব্য, “৩ মাস বা ৬ মাসের জন্য কোনও গুদাম বা ঘর ভাড়া মেলে না। ন্যূনতম ১১ মাসের জন্য ভাড়া নিতে হবে। সেই পরিকাঠামো বা অর্থবল ডিলারদের নেই। সেক্ষেত্রে রাজ্য তাদের গুদামে এই বিপুল শস্য মজুতের ব্যবস্থা করে দিক।” শুধু শস্য মজুত নয়, বর্ষার মরশুম শুরু হলে তার জন্য মজুত শস্য নষ্ট হওয়ার ভয় আছে। এই পরিস্থিতিতে ছয় মাসের শস্য আগাম সংগ্রহ রাখা এবং তা সরবরাহের মতো বিপুল কাজ রাজ্য সরকারের ‘লজিস্টিক সাপোর্ট’ ছাড়া সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন ডিলাররা।