সংবাদদাতা,ময়নাগুড়ি: জন্মের পর থেকে অসুস্থ শিশুকন্যা। মেয়ের চিকিৎসা করতে সর্বস্ব খুইয়েছেন বাবা। এদিকে, মেয়ের জন্মের কিছুদিন পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন মা। নাতনির জন্মের পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তার ঠাকুমাও। মঙ্গলবার সকালে অসুস্থ সেই শিশুকন্যা এবং তার বাবারও অস্বাভাবিক মৃত্যু হল। পরিবারের সদস্যদের অনুমান, শিশুকন্যাকে কীটনাশকজাতীয় কিছু খাইয়ে তার বাবা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এদিন ময়নাগুড়ির শিঙিমারি এলাকায় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোকের ছায়া নেমে আসে। খবর পেয়ে চলে আসে ময়নাগুড়ি থানার পুলিস। বাবা ও সাত মাসের শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। কর্তব্যরত চিকিৎসক দু’জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিস জানিয়েছে, দেহ দু’টি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
মৃত শিশুকন্যার বাবার নাম দীপক রায় (৩১)। তিনি একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে কাজ করতেন। সাত মাস আগে তাঁর স্ত্রী দীপা রায় কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। মেয়ের নাম রেখেছিলেন অরুণিকা। পরিবারের দাবি, শিশুটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। তার মাথা অন্যান্য শিশুর থেকে অনেকটাই বড় ছিল। সন্তানের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করেছেন দীপক। মেয়ের অসুস্থতার কারণে ভেঙে পড়েছিলেন স্ত্রী দীপাও। চার মাস আগে বাপেরবাড়ি গিয়ে তিনি আত্মঘাতী হন।
মৃত দীপকের দাদা মিঠু রায় বলেন, জন্মের পর থেকেই ভাইঝির মধ্যে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। মা,ভাইয়ের স্ত্রী দীপাও অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। শিলিগুড়িতে কিছুদিন চিকিৎসাধীন ছিল। মেয়েকে সুস্থ করতে ভাই প্রচুর ছোটাছুটি করেছে। চিকিৎসার জন্য কলকাতা পর্যন্ত গিয়েছে। কিন্তু কোনও চিকিৎসক আশার কথা শোনাতে পারেননি। স্বভাবতই ভাই ভেঙে পড়ে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস মেয়েকে কোনওমতেই আর সুস্থ করে তোলা সম্ভব নয় বুঝতে পেরে দীপক এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষ বলেন, একটি শিশু এবং এক যুবকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।