• দক্ষিণ দিনাজপুর: সীমান্তের গ্রামে গা ঢাকা দিয়ে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা! কড়া নজরদারি জেলা পুলিসের
    বর্তমান | ১৪ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বালুরঘাট: সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনা। তাই প্রত্যেকটি গ্রামে এবার নজরদারি শুরু করল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিস। পুলিস সুপারের নির্দেশে প্রত্যেকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ বাসিন্দাদের সচেতন করছেন আইসিরা। অচেনা কাউকে দেখলেই থানায় খবর দিতে বলা হচ্ছে। এনিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ও প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করছেন পুলিস আধিকারিকরা। জেলার ন’টি থানাকেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলার ৬৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই বৈঠক করছে পুলিস। অন্যদিকে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি সীমান্তে মঙ্গলবার প্রকল্প উদ্বোধনে গিয়েছিলেন রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। তিনিও সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকতে বলেছেন। 

    জেলার পুলিস সুপার চিন্ময় মিত্তাল বলেন, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে গিয়ে সবাইকেই সতর্ক করা হচ্ছে। গ্রামের মধ্যে অচেনা বা সন্দেহভাজন কাউকে দেখা গেলে পুলিসে খবর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। গোটা জেলাজুড়েই সমস্ত থানাকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

    বালুরঘাটের বোয়ালদার পঞ্চায়েতের প্রধান দীপক মাহাতো বলেন, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার স্বার্থে বালুরঘাট থানার সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। আইসি নির্দেশ দিয়েছেন যদি এলাকায় অচেনা বা সন্দেহভাজন কাউকে দেখা যায়, কারও বাড়িতে বাংলাদেশি আশ্রয় নিয়ে থাকলে খবর দিতে বলা হয়েছে।  সেইমতো আমরা নজরদারি চালাচ্ছি। 

    অন্যদিকে, এদিন হিলি সীমান্তের চক গোপাল বিএসএফ ক্যাম্প সংলগ্ন স্থানে ঠান্ডা পানীয় জলের মেশিন বসাল জেলা পরিষদ। এর উদ্বোধন করেন রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। এতে জেলা পরিষদের সভাধিপতি চিন্তামণি বিহা, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ কৌশিক মাহাতো সহ অন্যান্যরা  উপস্থিত ছিলেন। পানীয় জলের মেশিন উদ্বোধন করে বিএসএফের ভূয়সি প্রশংসা করেন মন্ত্রী। পাশাপাশি সীমান্তবর্তী গ্রামবাসীদের সতর্ক থাকারও ব্যাপারেও সচেতন করেন। মন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে বিএসএফ কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। জেলা পরিষদের উদ্যোগে জওয়ানদের জন্য ঠান্ডা পানীয় জলের মেশিন উদ্বোধন করা হল। বিএসএফ ও সেনাবাহিনী আমাদের জীবন রক্ষা করছে। তাই এদের জন্য কিছু করতে পারলে আমাদের ভালো লাগবে। যদিও বাংলাতে এখনও যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তা সত্ত্বেও সীমান্তের মানুষকে সতর্ক ও সাবধান থাকতে বলেছি। 

    প্রসঙ্গত, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তিনদিকেই রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত। সীমান্ত দিয়ে প্রায়ই অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে। গত বছর ৫ আগস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জেলার হিলি সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের ঘটনা বেড়েছে। জেলায় এখনও ৩৫ কিমি’র বেশি সীমান্ত কাঁটাতার বিহীন। ফলে অনুপ্রবেশের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে বলে অভিযোগ। অনেক মানুষ টাকার বিনিময়ে আশ্রয় নিচ্ছে ভারতীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে। এরপর সেখান থেকে পাড়ি দিচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। এদিকে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সীমান্তে আরও অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। পাকিস্থানি চরেরাও অনুপ্রবেশ করে লুকিয়ে থাকতে পারে। তাই এই পরিস্থিতিতে সতর্ক রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিস।
  • Link to this news (বর্তমান)