উত্তরবঙ্গে জুনের প্রথম সপ্তহেই বর্ষা, প্রস্তুত বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তর
বর্তমান | ১৪ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: এবার নির্দিষ্ট সময়ের আগে বর্ষা নামবে উত্তরবঙ্গে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, গত বছরের তুলনায় এবার তিনদিন আগে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করবে কেরলে। সেই নিরিখে এবার উত্তরবঙ্গেও মৌসুমি বায়ু কয়েকদিন আগে প্রবেশ করবে বলেই আশঙ্কা। এই অবস্থায় সমতলে বন্যা, নদী ভাঙন ও পাহাড়ে ধস সহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রতিটি জেলা। ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় সিভিল ডিফেন্সের ভলান্টিয়ার টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বেশকিছু দিন ধরেই উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতলে বিক্ষিপ্তভাবে কালবৈশাখী, বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি চলছে। মঙ্গলবারও দিনভর শিলিগুড়ির আকাশ ছিল মেঘলা। কিছু জায়গায় ছিটেফোটা বৃষ্টি হয়। এতে এখানকার আবহাওয়া অনেকটাই আরামদায়ক। আলিপুরদুয়ার জেলাতেও গরমের দাপট কিছুটা কমেছে। তবে কোচবিহারে হালকা বৃষ্টি হলেও গরমের দাপট তেমন কমেনি। জলপাইগুড়িতে ছিল ভ্যাবসা গরম। আরও কয়েকদিন এমন আবহাওয়া চলবে বলেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। এই অবস্থায় মৌসুমি বায়ুর আগমন নিয়ে সুখবর শুনিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। মঙ্গলবার সিকিম কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, গতবছর কেরলে ৩১ মে’র মধ্যে মৌসুমি বায়ু প্রবেশের পূর্বাভাস ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেবার কেরলে মৌসুমি বায়ুর আগমন ঘটে ৩০ মে। কেরলের ঠিক দু’দিন পর অর্থাৎ ২ জুন বর্ষা প্রবেশ করে উত্তরবঙ্গে। এবার কেরলে মৌসুমি বায়ু প্রবেশের পূর্বাভাস ২৭ মে। গত বছরের থেকে তিনদিন আগে সেই রাজ্যে বর্ষা নামছে এবার। বিশেজ্ঞদের বক্তব্য, সাধারণত কেরলে বর্ষা প্রবেশের দশ দিন পর উত্তরবঙ্গে বর্ষা নামার কথা। সেই মতো এবার ৬ জুন বর্ষা নামতে পারে। কিন্তু গত বছর কেরলের একদিন পরই এখানে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করেছিল। এবারও সে রকম ঘটতে পারে। সিকিম কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা অবশ্য বলেন, কেরলে মৌসুমি বায়ু কতটা শক্তিশালী হবে, তার ভিত্তিতেই এখানে বর্ষা নামবে। কাজেই উত্তরবঙ্গে বর্ষা নামার পূর্বাভাস এখনই স্পষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।
এদিকে, কেরলে আগাম বর্ষা নামার খবর পেয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করেছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি। ইতিমধ্যে প্রতিটি জেলা প্রশাসন জেলা পর্যায়ে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং করেছে। মিনি সচিবালয় উত্তরকন্যার বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তরের এক ডেপুটি সচিব বলেন, ওই কমিটিতে ত্রাণ, দমকল, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, পুলিস, পূর্ত, সেচ, পিএইচই সহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। প্রতিটি দপ্তরকে বন্যা, ধস সহ বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।