• করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতাল: দীর্ঘদিন ধরে মেশিন খারাপ, এক্স-রে করাতে হচ্ছে বাইরে থেকে, দুর্ভোগ
    বর্তমান | ১৪ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, করিমপুর: মেশিন খারাপ হওয়ার কারণে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের এক্স-রে বিভাগদীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে রয়েছে। হাসপাতালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এইবিভাগটি বন্ধ থাকার ফলে প্রতিদিন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীও তাঁদের পরিজনদের। হাসপাতালের চিকিৎসক এক্স-রে করতে বললেই রোগীদের বাইরেছুটতে হচ্ছে। এর ফলে রোগীকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার ঝামেলার পাশাপাশি খরচও বেশি হচ্ছে।ক’দিন আগেই বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে করিমপুরহাসপাতালে আসেন মুরুটিয়ারস্বপন বিশ্বাস। তাঁর পরিবারেরলোকজন বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দেখার পরেবুকের এক্স-রে করার কথা জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক। কিন্তু হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন খারাপ হওয়ায় সেখানে এক্স-রে করা যায়নি। তাই বাধ্য হয়ে রোগীকে নিয়ে আমাদের বাইরে ছুটতে হয়। বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে এসেও হয়রান হতে হচ্ছে। একই সমস্যায় পড়তে হয়েছে হোগলবেড়িয়ার ইসমাইল মণ্ডলকে।পেশায় দিনমজুর ওই প্রৌঢ় পড়ে গিয়ে কোমরে চোট পেয়েছিলেন। হাসপাতালেরচিকিৎসক তাঁকে এক্স-রে করাতে বলেন। ওই প্রৌঢ় বলেন, আমরা গরিব মানুষ। ভালোচিকিৎসার জন্য সবাই সরকারি হাসপাতালে আসেন। কিন্তু বাইরে থেকে এক্স-রেকরাতে গিয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ হয়ে গেল। ওই টাকায় ওষুধ কিনব ভেবেছিলাম।কিন্তু সেটা আর হল না। এলাকার মানুষের অভিযোগ, চিকিৎসার জন্য করিমপুরগ্রামীণ হাসপাতালের উপর করিমপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষমানুষ নির্ভর করেন। এছাড়াও এই হাসপাতালের অবস্থানগত কারণের জন্যও পাশেরজেলা মুর্শিদাবাদ থেকে বহু মানুষ চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালেই আসেন। করিমপুর-২ ব্লকের নতিডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালেও এক্স-রে করানোর ব্যবস্থা না থাকায় সেখানথেকেও বহু রোগী করিমপুর হাসপাতালে আসেন। তাঁরাও সকলে এক্স-রের সুবিধা না পেয়েফিরে যান। গত কয়েক বছরে হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণ হলেও সেই অনুপাতেহাসপাতালের পরিকাঠামোর কোনও উন্নতি হয়নি। ফলে হাড় ভাঙার সমস্যা নিয়েনিত্যদিন হাসপাতালে এসে হয়রান হতে হচ্ছে বহু মানুষকে। 

    হাসপাতাল সূত্রে জানাগিয়েছে, বছর দশেক আগে এক্স-রে মেশিন থাকলেও টেকনিশিয়ান না থাকায় বহু সময়এই বিভাগ বন্ধ ছিল। এখন এক্স-রে মেশিন পরিচালনার জন্য একজন টেকনিশিয়ানকেবেতন দিয়ে রাখতে হচ্ছে অথচ সেই মেশিন সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিহচ্ছে সাধারণ মানুষের। করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার মনীষা মণ্ডল বলেন,হাসপাতালের বহির্বিভাগেই দৈনিক গড়ে সাড়ে চারশো জন রোগী আসেন। তার মধ্যে গড়েপ্রায় কুড়ি জন আসেন হাড় সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে। সেক্ষেত্রে তাঁদের সকলকেইএক্স-রে করানোর জন্য বাইরের কোথাও পাঠাতে হচ্ছে। 

    অনেক দিনের পুরনো মেশিন খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণে এক্স-রে বিভাগ সম্পূর্ণ বন্ধহয়ে রয়েছে। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি একাধিকবারজানানোও হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)