নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: দীঘার জগন্নাথ মন্দির চত্বরে ১২টি দিয়াস্তম্ভে ৬৭২টি ধাতব বাতি লাগানোর কাজ হাতে নিয়েছে হিডকো। প্রতিটি দিয়াস্তম্ভে ৫৬টি করে প্রদীপ জ্বলবে। ১২টি দিয়াস্তম্ভে মোট ৬৭২টি মেটালিক ইলুমিনেটিং ল্যাম্প জ্বালানো হবে। সন্ধ্যার পর এই আলো মন্দিরের জৌলুস আরও বাড়িয়ে দেবে। এমনিতেই সন্ধ্যার পর চন্দননগরের আলোর রোশনাইয়ে ভাসে গোটা মন্দির। তাতে মন্দিরের আকর্ষণ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এবার দিয়াস্তম্ভেও জ্বলবে বাতি। পুণ্যার্থীরা বলছেন, একসঙ্গে ৬৭২টি বাতির আলো জগন্নাথ মন্দিরের দীপ্তি আরও বাড়বে।
দ্বারোদ্ঘাটনের পর থেকেই দীঘার জগন্নাথ প্রভুর ‘নব আলয়’-এ প্রতিদিন হাজার হাজার পুণ্যার্থীর ভিড় জমছে। বিকেলের পর তাপমাত্রা কিছুটা কমতে শুরু করলেই মন্দিরের দু’টি গেটের সামনে ভিড় উপচে পড়ছে। প্রতিদিন বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ভিড় সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। মন্দিরের বাইরে সুসজ্জিত পার্কেও একই দৃশ্য। মন্দিরকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার লক্ষ্যে সবকটি দিয়া স্তম্ভে ধাতব বাতি বসছে। মন্দিরের ভেতর বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ফিডার পিলার বক্স অন্যত্র সরানো হবে। সেইসঙ্গে ডালা সাজানোর জন্য নির্মিত স্টল, চৈতন্য গেট এবং মাসির বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে।
জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা যাবে ‘ডালা আর্কেড’ থেকে। দু’টি কমপ্লেক্সে মোট ৩৬টি স্টল রয়েছে। নির্মাণ শেষের মুখে। এই স্টল কীভাবে বণ্টন হবে তানিয়ে অনেকের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। কারণ, জগন্নাথ মন্দিরের সামনে একটি স্টল পাওয়ার অর্থ মোটা রোজগার নিশ্চিত হওয়া। তাই অনেকেই সরকারি এই স্টল পেতে চাইছেন। জেলা প্রশাসন ওইসব স্টল বিলির দায়িত্ব নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে না। এটা বেশ ঝক্কির কাজ বলে তারা মনে করছে। তাই হিডকো ওইসব স্টল বিলি করবে।
৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ায় মন্দির উদ্বোধনের পর থেকে রোজ ৫৫ থেকে ৬০ হাজার পুণ্যার্থী মন্দিরে ভিড় করছেন বলে জানা গিয়েছে। প্রয়োজনীয় সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পুলিস ও সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছে। উদয়পুরে বাংলা-ওড়িশা সীমানায় ২৪ ঘণ্টা নাকা চেকিং চলছে। মন্দিরের গেটেও আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা থাকছে। এ রাজ্যের পাশাপাশি ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকেও পুণ্যার্থীরা আসছেন। সন্ধ্যার পর জগন্নাথ মন্দিরজুড়ে ভক্তের ঢল নামছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গরমের ছুটি চলায় এই মুহূর্তে ভিড় অনেকটাই বেশি। ট্রেন, বাস, প্রাইভেট গাড়িতে চড়ে হাজার হাজার পুণ্যার্থীর গন্তব্যস্থল দীঘা। তাঁদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে হিডকো মন্দির সংলগ্ন নিজস্ব ভবনে একই ছাতার তলায় পুলিস, দমকল, স্বাস্থ্য শিবির এবং ট্রাস্ট বোর্ডের অফিস করেছে। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, দিয়াস্তম্ভে ধাতব বাতি লাগানোর কাজ করবে হিডকো। ডালা আর্কেডের কাজ শেষের মুখে। হিডকো ওইসব স্টল বিলি করবে। মন্দির দেখার জন্য প্রতিদিন অসংখ্য ভক্ত দীঘায় আসছেন। ফলে অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেকেই সমৃদ্ধ হচ্ছেন। ফাইল চিত্র