• পাথুরে এলাকায় অল্প জলে লাভজনক শস্যচাষের উদ্যোগ
    বর্তমান | ১৪ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: বীরভূম জেলার একাধিক এলাকা পাথুরে। মাটির জল ধারণ ক্ষমতা একপ্রকার নেই বললেই চলে। সেইসঙ্গে ওইসব এলাকা থেকে ভূগর্ভস্থ জল তোলাও রীতিমতো চ্যালেঞ্জের বিষয়। এছাড়া একাধিক পাথুরে এলাকায় কৃষিকাজের জন্য প্রয়োজনীয় সেচের জল পৌঁছয় না। এই পরিস্থিতিতে ওইসব এলাকায় কৃষিকাজকে লাভজনক করে তুলতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর উদ্যোগী হয়েছে। মূলত অল্প জলের ব্যবহারে কীভাবে কৃষিকাজ করা সম্ভব, তা বোঝানোর কাজ শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে কৃষকদের ভুট্টা, বাজরা, রাগি ফসল ও সূর্যমুখীর চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের সচেতন করতে ইতিমধ্যেই একাধিক ব্লকে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। আধিকারিকদের কথায়, ভুট্টা, বাজরা, রাগি ও সূর্যমুখীর চাষে জলের চাহিদা তুলনামূলক ভাবে কম। ফলত পাথুরে এলাকায় সহজেই এসব ফসল চাষ করা সম্ভব হবে। এতে কৃষকদের মুনাফার অঙ্কও ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হবে। জেলা পরিষদের কৃষিসেচ ও সমবায় স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম খান বলেন, আমরা কৃষকদের বোঝানোর কাজ শুরু করেছি। ওইসব ফসল খুবই অর্থকরী। উৎপাদন সাময়িকভাবে কম হলেও লাভের পরিমাণ যথেষ্ট রয়েছে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র অল্প জলে কৃষিকাজে উদ্ধুদ্ধ করা নয়, উৎপাদিত শস্য বাজারজাত করার ক্ষেত্রেও আমরা কৃষকদের পাশে থাকব। এতে তাঁদের মুনাফা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

    বীরভূম মূলত সুখা এলাকা হিসেবেই পরিচিত। এই জেলার মুরারই-১, রামপুরহাট-১, নলহাটি-১, খয়রাশোলের কিছুটা অংশ পাথুরে এলাকা হিসেবে পরিচিত। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওইসব এলাকায় ভূগর্ভস্থ জল তোলাও রীতিমতো চ্যালেঞ্জের বিষয়। ড্র্যাগওয়েলের মাধ্যমেও জল তোলা খুবই কষ্টকর। সেইসঙ্গে ওইসব এলাকায় সেচের জলও পৌঁছয় না। স্বাভাবিক ভাবেই কৃষিকাজের ক্ষেত্রে জলের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় কৃষকদের। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে খরচের বহরও বাড়তে থাকে। সমস্যা আঁচ করতে পেরেই সংশ্লিষ্ট দপ্তর বিকল্প চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। জলের খরচ কমিয়ে ওই এলাকার কৃষকদের লাভের অঙ্ক বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভুট্টা, বাজরা, রাগি, সূর্যমুখী চাষে জোর দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ধান, গমের পরিবর্তে এইসব ফসল চাষের গুণাগুণ সম্পর্কে ইতিমধ্যে কৃষকদের বোঝানোর কাজ শুরু হয়েছে। এজন্য জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শিবির করে সেই কাজ চলছে। জানা  গিয়েছে, কৃষকদের আগ্রহী করে তোলার পাশাপাশি প্রয়োজন অনুসারে তাঁদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে এসব ফসল চাষের ক্ষেত্রে আগ্রহী কৃষকদের বীজ সংক্রান্ত নানা তথ্য ও দপ্তরের তরফে দেওয়া হবে। সবশেষে উৎপাদিত ফসল বিক্রির ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা নেওয়া হবে।

    প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, পাথুরে এলাকায় উৎপাদিত ফসলগুলি বাজারজাত করার ক্ষেত্রে কৃষি বিপণন দপ্তর সহযোগিতা করবে। সুফল বাংলার হাত ধরে কৃষকদের থেকে সরাসরি ফসল কেনার ভাবনাও রয়েছে। -ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)