• তীব্র দাবদাহের জেরে পর্যটকশূন্য তারাপীঠ, বুকিং বাতিলের হিড়িক, শীতল ভোগে দেবীকে নিবেদন করা হচ্ছে ডাব
    বর্তমান | ১৪ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: তীব্র তাপপ্রবাহে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে তারাপীঠ। সাধারণত স্কুলে গরমের ছুটি পড়লে তারাপীঠে উপচে পড়ে পর্যটক, সেখানে এদিন বামাখ্যাপার সাধনস্থলে ভিড় নেই। খাঁ খাঁ করছে মন্দির চত্বর। হোটেল, রিসর্ট, লজ, সরকারি অতিথি নিবাস কার্যত জনশূন্য। নতুন বুকিং তো দূর, পুরনো বুকিংই বাতিলের হিড়িক পড়েছে। 

    কয়েকদিন ধরে সূর্যের প্রখর তাপে পুড়ছে রাঙামাটির জেলা বীরভূম। তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে।  এদিনও দিনভর তাপপ্রবাহের কবলে ছিল গোটা জেলা। সেই সঙ্গে বইছে গরম বাতাস। মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ফি বছর এই সময়ে ৫০-৬০ হাজার ভক্তের সমাগম হয়। কিছুদিন আগে পর্যন্ত সেই ভিড় ছিল। স্কুলগুলিতে ছুটি ঘোষণা করায় ভেবেছিলাম সেই ভিড় বজায় থাকবে। কিন্তু দিন কয়েকের তাপপ্রবাহে পর্যটকদের আনাগোনা নেই বললেই চলে। অনেকেই হোটেল বুকিং বাতিল করেছেন। এদিন যে কয়েকজন এসেছিলেন তাঁরা ভোর ভোর পুজো দিয়ে চলে গিয়েছেন। 

    সাম্প্রতিককালে তারাপীঠে পর্যটকের ঢল নামছিল। এর আগে গ্রীষ্মেও পর্যটকরা আসতেন। দিনের বেলা পর্যটকরা হোটেলের এসি ঘরে বন্দি থাকলেও বিকেলের পর মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন। কিন্তু দিন কয়েকের তাপপ্রবাহের কারণে পর্যটকরা আর সেভাবে আসতে চাইছেন না। ফলে পর্যটন ক্ষেত্রে এখন মন্দা। মাথায় হাত লজ ব্যবসায়ীদের। লজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুনীল গিরি বলেন, গরমে লজ ব্যবসার অবস্থা বেহাল। অধিকাংশ রুম ফাঁকা। যাঁরা রুম বুক করেছিলেন, তাঁরাও বুকিং বাতিল করছেন। অন্যান্য বছর গ্রীষ্মে যত পর্যটক থাকে এবার তা নেই। 

    খাবারের হোটেলগুলির অবস্থা আরও খারাপ। অধিকাংশ হোটেলের ঝাঁপ বন্ধ। যে কয়েকটি খোলা আছে সেগুলিও মাছি তাড়াচ্ছে। তাঁরা বলছেন, গ্রীষ্মে এতটা খারাপ পরিস্থিতি অন্যান্য বছরগুলিতে হয়নি। এদিকে গরমের কারণে দেবীর শীতল ভোগে ডাব আবশ্যিক করেছে মন্দির কমিটি। 

    শুধু তারাপীঠ মন্দির নয়। অত্যাধিক গরমের কারণে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউই সকাল ন’টার পর বাড়ির বাইরে পা রাখেননি। যাঁরা খুব প্রয়োজনে বেরিয়েছেন তাঁদের কেউ ছাতা নিয়ে, কেউ বা মুখে রুমাল বেঁধে ছিলেন। অনেক পথচলতি মানুষ একটু স্বস্তি পেতে ভিড় জমিয়েছিলেন ঠান্ডা পানীয়ের দোকানে। রানিগঞ্জ-মোড়গ্রাম ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কেও যানবাহনের সংখ্যা ছিল কম। দূরপাল্লার বাসে যাত্রী ছিল হাতেগোনা। সব মিলিয়ে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অঘোষিত বন্ধের চেহারা নিয়েছিল গোটা এলাকা। পথচলতি সাইদুল ইসলাম বলেন, মনে হচ্ছে আগুনের গোলার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। মাত্রাতিরিক্ত গরমের প্রভাব পড়েছে রামপুরহাট, নলহাটি, মুরারই পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকাতেও। শ্রমিকদের আনাগোনা কমে এসেছে। দুপুরে বন্ধ রাখা হচ্ছে ক্র্যাশার। সকলেই এই অস্বস্তির 

    হাত থেকে রেহাই পেতে বৃষ্টি 

    চাইছেন। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)