নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রায় ২০ বছরের টালবাহানা কাটিয়ে বছর তিনেক আগে শুরু হয়েছে জরাজীর্ণ ল্যান্সডাউন বাজারের সংস্কার। কিন্তু মাত্র ন’জন দোকানদারের জন্য সেই কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ বাজার সমিতির। দ্বিতীয় পর্যায়ের সংস্কার নিয়ে জটিলতা কাটাতে মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভায় বৈঠক হয়। কিন্তু ওই ন’জন ব্যবসায়ীর একবগ্গা মনোভাবের কারণে জটিলতা কাটেনি বলেই সূত্রের দাবি। আজ, বুধবার ফের বাজারটি সরেজমিনে পরিদর্শনে যাচ্ছেন তিন মেয়র পারিষদ সন্দীপরঞ্জন বক্সি, আমিরুদ্দিন ববি ও বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবারের বৈঠকে এঁরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার।
সূত্রের খবর, এদিন বৈঠতে ন’জন দোকানদারের তরফে কয়েক দফা দাবি পেশ করা হয়। কোথায় কে দোকান পাবেন, সরকারিভাবে চুক্তি কী হবে, এসব প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। পুরসভা কিছু দাবি মেনে নিলেও কয়েকটি ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েই গিয়েছে। ওই দোকানদারদের মামলা তুলে নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। বাজার সমিতির তরফে সম্পাদক নিতাই দাস বলেন, ‘মামলার কারণেই বাজার সংস্কারের কাজ আটকে রয়েছে। উন্নয়নে বাধা দিচ্ছে ওরা। বাকিদের দুর্ভোগ হচ্ছে। আমরা ক্ষতিপূরণ, দোকানের বিকল্প জায়গা, সবটাই ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু এরা নানা কারণে রাজি হচ্ছে না।’
বৈঠকের পর দেবাশিস কুমার জানান, কিছু জটিলতা রয়েছে। ওই ন’জনের মধ্যে চারজনের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক সমাধান হয়েছে। বাকিদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। সন্দীপরঞ্জন বক্সি বলেন, ‘ওই ন’জন দোকানগার উকিল নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু, তাঁদের বৈঠকে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। একের পর এক ইস্যু সামনে এনে দীর্ঘদিন ধরে কাজ আটকে রাখা হচ্ছে। ওঁদের অনেক দাবি আমরা মেনেছি। বিকল্প জায়গা দেওয়া হচ্ছে। মামলা তুলে নিতে বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, এই বাজারের সংস্কারে আর ঢিলেমি করা যাবে না। দ্রুত এই কাজ হবে।’ যদিও ন’জন দোকানদারের পাল্টা অভিযোগ, ‘আমাদের তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেখানে জায়গা দেওয়া হচ্ছে, সেখানে ব্যবসা হবে না। তাছাড়া, আমরা চুক্তি করতে চাইছি। ওরা নানা বাহানা দিচ্ছে।’
পুরসভা সূত্রে খবর, ল্যান্সডাউন বাজার ভেঙে উঠবে ন’তলা শপিং মল। বেসমেন্টে হবে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা। একতলা ও দোতলায় হবে বাজার। বাকি তলগুলি ডেভেলপার তাঁর নিজের মতো লিজ দিতে পারবে বা বিক্রি করবে। এই বাজারটির উন্নয়ন হচ্ছে পিপিপি মডেলে। কমবেশি ৩৫০ জন দোকান পাবেন। সব্জি, মাছ, মাংস, ফুল, ফলের দোকানের জন্য বড় জায়গা থাকবে। যাঁদের দোকান ছিল, তাঁরা সবাই জায়গা পাবে। আড়াই বিঘা জমির উপর এই বাজার। ইতিমধ্যে প্রথম দফায় প্রায় ২০০ জন দোকানদারকে অস্থায়ীভাবে জায়গা দেওয়া হয়েছে। বাজারের একাংশে সংস্কার চলছে। অভিযোগ, দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে এই ক’জন দোকানদারের বাধায়। - নিজস্ব চিত্র