• ঘণ্টায় ৬৫ কিমির ঝড় আর ‘দানবীয়’ মেঘের বৃষ্টিতেই তাণ্ডব, চলতি সপ্তাহেই ফের কালবৈশাখীর সম্ভাবনা শহর-শহরতলিতে
    বর্তমান | ১৪ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সকাল থেকে চড়া রোদ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরমের দাপট যেন মাত্রাছাড়া। রাতটুকুও কি একইরকম অস্বস্তিতে কাটবে? সোমবার দিনভর এই ছিল সবার প্রশ্ন। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ আচমকাই শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া। মিনিটে মিনিটে বাড়তে থাকে ঝড়ের গতি। রাস্তাঘাট তখন ধুলোয় ঢেকে গিয়েছে। ঝরাপাতা উড়ছে চারপাশে। হাওয়ার গতিবেগ এতটাই ছিল যে, চোখ বন্ধ করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া উপায় ছিল না। ঝড়ের মাঝেই চারদিক অন্ধকার হয়ে গেল। পাওয়ার কাট! সোমবার রাতে কলকাতা ও শহরতলির বেশিরভাগ এলাকার চিত্রটা ছিল এমনই। ঝড়ের মধ্যেই শুরু হয়ে যায় তুমুল বৃষ্টি। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছ, ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় হয়েছে। কিন্তু কালবৈশাখী হঠাত্ কেন এমন চেহারা নিল? আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, সোমবার সন্ধ্যার পর হুগলির দিক থেকে ‘দানবীয়’ বজ্রমেঘ কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় প্রবেশ করে। দোসর হয় ঝোড়ো হাওয়া। তার ফলেই কালবৈশাখী বড় আকার নেয়। 

    আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাস জানিয়েছেন, আজ-কালের ( বুধবার ও বৃহস্পতিবার) ম঩ধ্যে আরও এক দফায় জোরালো কালবৈশাখী হতে পারে শহরে। ঝড়ের তীব্রতা কোথাও কোথাও আরও বেশি হতে পারে। বেসরকারি সূত্রের দাবি, সোমবার রাতে কলকাতা ও সংলগ্ন হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কোথাও কোথাও ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৯০ কিলোমিটার ছিল। আর মেঘের উচ্চতা ছাড়িয়ে গিয়েছিল ২০ কিলোমিটার! যেন এক বিশালাকায় দানব দাঁড়িয়ে আছে! দমদমে ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫২ কিলোমিটার। তবে দু’জায়গাতেই বৃষ্টি হয়েছে ১০ মিলিমিটারের কম। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, কলকাতায় এবার গত বছরের এই সময়ের তুলনায় বেশি কালবৈশাখীর ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। এপ্রিল মাস থেকে গোটা চারেক কালবৈশাখী হয়েছে কলকাতায়। জেলাগুলিতেও হয়েছে একাধিক কালবৈশাখী। গত কয়েকদিন ধরে গরম হাওয়ার দাপটে নাভিশ্বাস উঠেছিল শহরবাসীর। সোমবার রাতের ঝড়-বৃষ্টির ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকে রোদের তেজ ও গরমের দাপট অনেকটাই কমে যায়। পথেঘাটে বেরনো মানুষের অস্বস্তিও কমে। এদিন কলকাতার সর্বনিম্ন আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৫০ শতাংশের কাছাকাছি। গত কয়েকদিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই ছিল। কিন্তু সোমবার রাতের ঝড়-বৃষ্টি ও আংশিক মেঘলা আকাশের সৌজন্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কিছুটা কমে ৩৫.২ ডিগ্রি হয়েছে। সোমবার রাতের ঝড়-বৃষ্টিতে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় গাছ প঩঩ড়ে যায়। বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলি এলাকায় একটি বড় গাছ উল্টে পড়ে। জনজীবনও অল্পবিস্তর বিপর্যস্ত হয়। রাতে বাড়ি ফেরার সময় বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ায় নাজেহাল হতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।  ভেঙে পড়া গাছের ডাল সরানোর কাজ চলছে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)