হাওড়া পুরসভায় আধুনিক কন্ট্রোল রুম ও কনফারেন্স হলের উদ্বোধন, দুর্যোগ পরিস্থিতিতে সহজেই চালানো যাবে নজরদারি
বর্তমান | ১৪ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে পড়েছে গাছ। কিংবা বিদ্যুৎবাহী তার ছিঁড়ে পড়েছে রাস্তায়। যে কোনও দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি সামাল দিতে এতদিন শুধুমাত্র হেল্পলাইন নম্বরের উপরেই ভরসা করতে হতো হাওড়া পুরসভাকে। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রথমবার নিজস্ব কন্ট্রোল রুম চালু করল পুরসভা। একইসঙ্গে পুরসভার ভিতরে একটি নতুন কনফারেন্স হলও তৈরি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কন্ট্রোল রুম ও কনফারেন্স হলের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়, হাওড়ার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের জেলা সদরের সভাপতি কল্যাণ ঘোষ, পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিস ও প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা। পাশাপাশি, শহরের বিভিন্ন এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজও শুরু করেছে পুরসভা।
২০২২ সালের আগস্ট মাসে হাওড়া পুরসভার ঐতিহ্যবাহী টাউন হলকে নতুন করে সাজানো হয়। কিন্তু পুরসভার নিজস্ব কন্ট্রোল রুম ছিল না। বর্ষার সময় পুরসভার ৫০টি ওয়ার্ডেই কম-বেশি জল জমে। তাছাড়া বিদ্যুৎবাহী তার ছিঁড়ে পড়া, গাছের ডাল ভেঙে পড়ার মতো ঘটনা সেই সময় প্রায়ই ঘটে। কন্ট্রোল রুম না থাকার কারণে এতদিন দুর্যোগের সময় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বেগ পেতে হতো পুরসভাকে। হেল্পলাইন নম্বর চালু থাকলেও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে প্রত্যক্ষ নজরদারি সম্ভব ছিল না। ফলে বিপদের আভাসও মিলত না। সে কারণেই তৈরি করা হয়েছে অত্যাধুনিক কন্ট্রোল রুম। এই রুমে ২০-২৫ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে ৫৫ ইঞ্চির চারটি বড় এলইডি মনিটর, আধুনিক সাউন্ড সিস্টেম। শীঘ্রই প্রতিটি ডেস্কে একটি করে কম্পিউটার বসানো হবে। এই কন্ট্রোল রুম থেকেই আপৎকালীন পরিস্থিতিতে পুলিস প্রশাসন ও হাসপাতালের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবে পুরসভা।
পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ডানার সময় আমাদের শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছুটে যেতে হয়েছিল, সেই সময় কন্ট্রোল রুম তৈরির ভাবনা মাথায় আসে। কন্ট্রোল রুম থাকলে যে কোনও দুর্ঘটনার আঁচ করে দ্রুত লোক পাঠানো সম্ভব হবে।’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এতদিন দুর্যোগের সময় কোনও জায়গার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রয়োজন হলে হাওড়া সিটি পুলিসের উপর আমাদের নির্ভর করতে হতো। বর্ষার সময় পঞ্চাননতলা, ইছাপুর, টিকিয়াপাড়া, ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাসের মতো জায়গায় সব থেকে বেশি জল জমে। গাছ ভেঙে পড়ার সম্ভাবনাও থাকে। তাই সেখানে নিজস্ব সিসি ক্যামেরা থাকলে সেই ছবি দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবে পুরসভা। ইতিমধ্যেই কুড়িটি জায়গায় ওয়্যারলেস সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ধাপে ধাপে শহরের আরও অনেক জায়গায় ক্যামেরা বসানো হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা। কন্ট্রোল রুমের পাশাপাশি এদিন পুরসভায় ‘চিরন্তনী’ নামের একটি নতুন কনফারেন্স রুমের উদ্বোধন হয়।
সব মিলিয়ে এই কাজে ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানা