প্রধান বিচারপতির পর মামলা ছাড়লেন বিচারপতি সৌমেন সেনও, ১০০ দিনের কাজে ধাক্কা
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৪ মে ২০২৫
বাংলার ১০০ দিনের কাজ নিয়ে আগেই জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এবার অনিশ্চয়তা চরমে উঠল। কারণ ১০০ দিনের কাজের বকেয়া আটকে রয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তা আটকে রাখা হয়েছে। তাই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল। প্রথমে এই মামলা ছিল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চে। তিনি সব জনস্বার্থ মামলা ছেড়ে দেওয়ায় ১০০ দিনের কাজ নিয়ে জনস্বার্থ মামলাও সরে যায়। তখন তা গিয়েছিল বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি মিতা দাস দে’র ডিভিশন বেঞ্চে। এবার ওই ডিভিশন বেঞ্চও ১০০ দিনের কাজের মামলা ছেড়ে দিল।
কেন্দ্রীয় সরকার কাজ করিয়ে যে টাকা বকেয়া রেখেছিল সেটা মিটিয়ে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তারপরও ১০০ দিনের কাজ বাংলার জন্য বন্ধ এবং বকেয়া টাকাও রাজ্যে আসেনি। ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি হয়েছে এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি আবার সিবিআই তদন্তের আবেদন জানান। আবার জনস্বার্থ মামলা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেত মজদুর সংগঠন। তাদের আবেদন, রাজ্য–কেন্দ্র দ্বন্দ্বের জেরে শ্রমিকরা কাজ পাচ্ছেন না। প্রাপ্য মজুরি থেকে বঞ্চিত–সহ বকেয়াও কেন্দ্র দিচ্ছে না। তাঁদের কাজ এবং মজুরি ফেরানো হোক।
এই ১০০ দিনের কাজের বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তৈরি হয় যাচাই কমিটি। ওই কমিটিতে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিরা আছেন। ওই কমিটি এপ্রিল মাসে কোর্টে রিপোর্ট দেয়, ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতিতে টাকা উদ্ধার করা গিয়েছে। চার জেলা থেকে মোট ২.২ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ওই টাকা এখন রাজ্য সরকারের কাছে আছে। ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় দল রাজ্যে এসেছিল। তারা হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, মালদা এবং দার্জিলিং জেলায় ৫ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তোলে। আর উদ্ধার করা ওই টাকা কেন্দ্রের কাছে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছিল।
রাজ্য সরকারের দুটি বক্তব্য ছিল। এক, দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক। দুই, ওই চার জেলাকে বাদ দিয়ে বাকি জেলাগুলিকে বকেয়া মেটানো হোক। কাজ দেওয়া হোক। এরপরই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রধান বিচারপতি জানতে চান, ওই চার জেলা বাদে রাজ্যের অন্য জেলায় ১০০ দিনের কাজ শুরু করা যাবে কি? বাকি জায়গায় কাজ শুরু হলে কেন্দ্র কি টাকা দেওয়া শুরু করবে? মে মাসে এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তাই আদালতের তোলা প্রশ্নের উত্তর জেনে আসতে কেন্দ্রের আইনজীবীকে নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। আর কেন জব কার্ড হোল্ডাররা বেকার ভাতা পাবে না তা জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ এই মামলা ছেড়ে দেয়। আর মঙ্গলবার সৌমেন সেনের বেঞ্চও ছেড়ে দিল।