পাকিস্তানে বন্দি সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউয়ের স্ত্রী রজনীকে মঙ্গলবার ফের ফোন করে স্বামীর মুক্তির বিষয়ে ভরসা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিনই উত্তরপাড়ায় বিজেপির একটি কর্মসূচিতে এসে পূর্ণমের মুক্তির ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় কয়লা ও খনি দফতরের প্রতিমন্ত্রী সতীশচন্দ্র দুবে। পূর্ণমের দ্রুত মুক্তির দাবিতে আজ, বুধবারবিকেলে কলকাতায় বিড়লা তারামণ্ডলের পাশে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মূর্তির পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি রয়েছে কংগ্রেসের।
ভারত-পাক সংঘর্ষ-বিরতি পর্বে এখনও মুক্তি পাননি পাকিস্তান রেঞ্জার্সের হাতে বন্দি হুগলির রিষড়ার বাসিন্দা পূর্ণম। গত ২৩ এপ্রিল (পহেলগামে জঙ্গি হানার পর দিন) পঞ্জাবের পঠানকোটেকর্মরত অবস্থায় ভুল করে পাকিস্তানে ঢুকে গাছের তলায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন পূর্ণম। তখনই পাক রেঞ্জার্স তাঁকে ধরে। সীমান্তে এমন ঘটলে দু’দেশের সীমান্ত রক্ষীদের মধ্যে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’-এর পরে সংশ্লিষ্ট জওয়ানকে মুক্তি দেওয়াই দস্তুর। কিন্তু পূর্ণমকেছাড়েনি পাকিস্তান।
রজনী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এ দিন ফোনে বলেছেন, যেন চিন্তা না করি, ভরসা রাখি। তিনি উচ্চপর্যায়ে কথা বলছেন। আশা করছেন, স্বামী শীঘ্রই ফিরে আসবেন। আমাদের কোনও সহায়তা প্রয়োজন কি না, তা-ও জিজ্ঞাসা করেছেন।’’
রজনীর দাবি, রবিবারের পরে, সোমবারেও তাঁকে ফোন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ওই জওয়ানের পরিবারের প্রতি খুবই সহানুভূতিশীল। নিজেই ওঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আমরাও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।’’
উত্তরপাড়ায় দলীয় কর্মসূচিতে এসে পূর্ণমকে দেশে ফেরানোর ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সতীশচন্দ্র দুবেও। তাঁর মন্তব্য, ‘‘অভিনন্দনের মতো (বায়ুসেনার পাইলট গ্রুপ ক্যাপ্টেন অভিনন্দন বর্তমান) পূর্ণমকেও ছাড়িয়ে আনা হবে।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন, “সরকার কূটনৈতিক চেষ্টা চালাচ্ছে। পূর্ণমকে দ্রুত ফেরানোর চেষ্টায় যাতে ঘাটতি না থাকে, সে দাবিতেই আমরা ইন্দিরা-মূর্তির পাদদেশে অবস্থান করব। বাংলার মানুষ, জওয়ানের পরিবার অপেক্ষা করছে পূর্ণম কখন বাড়ি ফিরবেন।”
পূর্ণমের বাবা ভোলানাথ বলেন, ‘‘সবাই ভরসা করতে বলছেন। অপেক্ষা ছাড়া, আর কী বা করব! তবে ছেলে যতক্ষণ না ফিরছে, নিশ্চিন্ত হতে পারছি না।’’