• প্রবল দাবদাহ থেকে বাঁচাতে আলিপুর চিড়িয়াখানায় ভালুক- ক্যাঙারুর খাঁচায় বসল এয়ার কুলার, বদল পশুপাখিদের খাবারেও
    আনন্দবাজার | ১৪ মে ২০২৫
  • প্রবল দাবদাহ থেকে চিড়িয়াখানার পশুপাখিদের বাঁচাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে কর্তৃপক্ষ। চিড়িয়াখানার ভালুক, ক্যাঙারু-সহ আরও বেশ কিছু প্রাণীর খাঁচায় বসানো হয়েছে এয়ার কুলার। বেশ কিছু বিদেশি পাখিদের ঠান্ডা বাতাসের পরশ দিতেও ওই একই পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, হাতি, বানর, শিম্পাঞ্জি, জিরাফ, জ়েব্রার মতো প্রাণীদের খাদ্যতালিকায় বদল আনা হয়েছে বলেই বন দফতর সূত্রে খবর।

    এ বছর এপ্রিল মাসে সে ভাবে চিন্তায় পড়তে হয়নি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু মে মাসের গোড়ার দিক থেকেই তাপমাত্রার পারদ চড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছোয় যে তৃণভোজী প্রাণী তো বটেই, বাঘের মতো প্রাণীদের জন্যও অতিরিক্তি জলের বন্দোবস্ত করতে হয়েছে। গ্রীষ্মের দাপটে খাঁচায় বন্দি বন্যপ্রাণীদের নাজেহাল অবস্থা দেখে আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বন দফতরের দ্বারস্থ হন। সেখান থেকেই প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়ার পরেই ভালুক, ক্যাঙারু এবং বিদেশি পাখিদের খাঁচায় এয়ার কুলার বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া বন দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষেই বহু পশুপাখির খাদ্য তালিকায় বদল আনা হয়েছে।

    হরিণ এবং ময়ূরের মতো প্রাণীদের যাতে অসুবিধা না হয় সে জন্য ওআরএস দেওয়া হচ্ছে। গাজর, তরমুজ-সহ নানা ফল দেওয়া হচ্ছে হরিণগুলিকে। তবে আলিপুর চিড়িয়াখানার এক কর্মীর কথায়, ‘‘প্রতি বছর গরম পড়লেই ময়ূর ও হরিণদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয়। গরমে যাতে প্রাণীদের অসুবিধা না হয় সে জন্য জলে ওআরএস মেশানো হয়। তা ছাড়া প্রাণীদের শরীরে জলশূন্যতা রুখতে টাটকা শাকসব্জির সঙ্গে ভেজানো ছোলা, আখের গুড় ও বিটনুনও খাওয়ানো হয়।’’ আলিপুর চিড়িয়াখানা সূত্রে খবর, দুটি পূর্ণবয়স্ক ভালুকের সঙ্গে দু’টি শাবক রয়েছে। গরমে তাদের শরীর অত্যাধিক খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণেই এয়ার কুলার বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই ঘটনা ঘটেছে ক্যাঙারুর ক্ষেত্রেও।

    বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‘গরমের কারণে যাতে কোনও পশুপাখি অসুস্থ না হয়ে পড়ে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গরমে পর্যাপ্ত জলের জোগান যেমন পশুদের জন্য রাখতে বলা হয়েছে। তেমনই চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে যাতে ডায়েট বদল করা হয়, তারও নির্দেশ গিয়েছে।’’ আলিপুর চিড়িয়াখানার পাশাপাশি, রাজ্যের অন্যত্র থাকা চিড়িয়াখানা এবং অভয়ারণ্যগুলিতেও একই পদক্ষেপ করতে বলেছেন মন্ত্রী।

    প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে মোট ছ’টির বেশি চিড়িয়াখানা এবং ১৫টি জাতীয় উদ্যান ও অভয়ারণ্য রয়েছে। এই বছর এখনও পর্যন্ত সে ভাবে বৃষ্টি হয়নি। তাই অভয়ারণ্যগুলিকে গাছের নতুন পাতা সে ভাবে হয়নি। জঙ্গলও ঘন হতে শুরু করেনি। এই অবস্থায় হরিণের অন্যতম প্রধান খাদ্য ঘাসের ঘাটতি যাতে না হয় সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)